গোষ্ঠী স্বার্থ দেখছে বিটিআরসি?

২৫ মে, ২০২৫  
২৫ মে, ২০২৫  
গোষ্ঠী স্বার্থ দেখছে বিটিআরসি?

বিটিআরসি প্রস্তাবিত নতুন নেটওয়ার্ক টপোলজি বহুজাতিক বিদেশী কোম্পানীর স্বার্থ রক্ষা করে দেশীয় উদ্যোক্তাদের অস্তিত্ব বিলীন করতে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন করেন আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম।  

রবিবার রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) শিল্পের চ্যলেঞ্জ ও সম্ভাবনা শীর্ষক কর্মশালা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেছেন  সভাপতি আসিফ সিরাজ রব্বানী। 

নতুন টপোলজিকে ‘চাপিয়ে দেয়া’ উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন,  নতুন টপোলজিতে গেলে আইওএফ এর পূর্বের বিশৃঙ্খল অবস্থায় ফিরে আসলে বিটিআরসি কি সেই দায় নেবেন? এর দায়ভার কার হবে। একটা চাপিয়ে দেয়া টপোলজি হলেই তো হবে না।

নতুন নেটওয়ার্ক টপোলজি নিয়ে বিটিআরসি আইজিডব্লিউ অপারেটরদের সাথে কোনো আলাপ করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, তারা কন্টাক্ট ক্যান্সেল করে দেয়ার পরে আলোচনায় এসেছে। এখানে আইওএস, ননআইওএস নিয়ে যে চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা, ফাইন্যান্সিয়াল বার্ডেন কোনো কিছুই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

তিনি আরো বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকসহ বিভিন্ন অ্যাপ ও ওয়েবসাইট থেকে মাসে ৩ কোটির বেশি আন্তজার্তিক ইনকামিং এটুপি এসএমএস আসছে মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে। প্রতি এসএমএস ৮ সেন্ট হিসাবে প্রতি মাসে আয় হয় ২৪ লাখ ডলার। যেখান থেকে মোবাইল অপারেটররা রাজস্ব দেয় মাত্র এক লাখ ৫৬ হাজার ডলার। কিন্তু এই সুযোগ পেলে আমরা বছরে সরকারকে ২শ' কোটি টাকা রাজস্ব দিতে পারবো। যা মোবাইল অপারেটরদের দেয়া রাজস্বের চেয়ে আট গুণ বেশি। একইসঙ্গে আমরা ব্যবসায় টিকে থাকতেও পারব।

আইওএফ সভাপতি জানান, গত ৬ বছরে রেভিনিউ শেয়ার থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে সাড়ে ১০ হাজার  কোটি টাকা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটররা। ওটিটির কারণে বিদেশ থেকে আসা কলের সংখ্যা ৮৮ শতাংশ কমার পরও এখনো বছরের ৫০০  কোটি টাকার মতো রাজস্ব ভাগাভাগি করছে। আইএলডিটিএস পলিসি বলবৎ রেখে এটুপি বা ইন্টারন্যাশনাল এসএমএস সেবার অধিকার দেয়া হলে  বছরের সরকারের সঙ্গে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় ভাগাভাগি করার পাশাপাশি তাদের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার শঙ্কাও কাটবে। 

সভায় সহ সভাপতি আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, আগে অনেকটা জোর করেই বিটিআরিসি আমাদের এমএনও এবং আইসিএক্সদের সাথে নতুন আইপি কানেক্ট করিয়েছি। সেখানে আমরা যে বিনিয়োগ করেছি সেগুলো এখনো ফেরত পাইনি। এখন তার ওপর ননআইওএসরা আইওএস আসছে। আমরা কোনো ইনভেস্টমেন্টই রিকভার করতে না পরায় শঙ্কিত। পুরোনো ডিরেক্টিভ মেনে চলার কোনো সুফল পেলাম না। এক্ষেত্রে পদে পদে মোবাইল অপারেটররা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।  

এক প্রশ্নের জবাবে বাংলা টেল, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ খুরশীদ আলম (অব:) বলেন, টিডিএম থেকে আইপি সিস্টেমে আসতে গত বছরেও আমরা ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছি। বাইরে আমাদের পপ থাকলে এখনো ঢাকা ও খুলনা ছাড়া কল আসতে পারে না। এটা দেশের স্বার্থ পরিপন্থী। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে আমরা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এটা হয় না। হতে পারে না। গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখে আমরা কখনোই ভালো থাকতে পারি না। 

  ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল হান্নান (অবঃ), প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, মীর টেলিকম লিমিটেড এবং নভোটেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিবুর রশিদ প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।