৮৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারিই ভিডিও গেমস খেলেন

২৪ মে, ২০২৫  
২৪ মে, ২০২৫  
৮৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারিই ভিডিও গেমস  খেলেন

 বিশ্বজুড়ে ৮৩.৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এখন কোনো না কোনোভাবে ভিডিও গেম খেলার সঙ্গে যুক্ত। বিশ্বের গেমারদের মধ্যে এশিয়া সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এ অঞ্চলে গেমারদের সংখ্যা প্রায় ১৪৮ কোটি। যা বৈশ্বিক গেমিং জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ। বাজারের বর্তমান মূল্যায়ন ৫৩৩.৪৬ বিলিয়ন ডলার।  বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির বাজার মূল্য ৩৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে ২০২৯ সালের মধ্যে, গেমিং শিল্পের মূল্য ৬৯১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদন স্ট্যাটিস্টিকা বলছে,  ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, স্মার্টফোনের বিস্তার, সাশ্রয়ী ডেটা এবং মোবাইল গেম অ্যাপগুলোর জনপ্রিয়তা এই বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। এশিয়ায় চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশগুলোতে মোবাইল গেমিং-এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা এই বৃদ্ধির কারণ।  দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইউরোপ, যেখানে গেমারদের সংখ্যা প্রায় ৪৫ কোটি। এরপর রয়েছে লাতিন আমেরিকা, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইন গেমিং, ই-স্পোর্টস এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বব্যাপী, প্রায় ৩.৩২ বিলিয়ন সক্রিয় ভিডিও গেম খেলোয়াড় রয়েছে। এরমধ্যে ৩,০০০ এরও বেশি ই-স্পোর্টস খেলোয়াড় রয়েছে।এশিয়ায় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন গেমার রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। গেমারদের মধ্যে ৫৩% পুরুষ এবং ৫২% গেমার কমপক্ষে একটি গেমিং পরিষেবাতে সাবস্ক্রাইব করে।

আজকের গেমিং জগৎ শুধুই ভিডিও গেম খেলা নয়। বরং এটি এখন একটি বহুমুখী ইকোসিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়েই হচ্ছে কোটি কোটি ডলার পুরস্কারের ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্ট। টুইচ, ইউটিউব গেমিং এর মতো প্লাটফর্মে লাখো গেমার নিয়মিত গেম খেলে ও লাইভ স্ট্রিমিং করে আয় করছে। লক্ষ লক্ষ ডেভেলপার এখন নতুন গেম তৈরির সঙ্গে জড়িত, যা একটি বিশাল কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও ক্লাউড গেমিং ভবিষ্যতের গেমিং অভিজ্ঞতাকে নিয়ে যাচ্ছে নতুন উচ্চতায়।

সর্বশেষ তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে, অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩ গুণেরও বেশি সক্রিয় ই-স্পোর্টস প্রতিযোগিতার খেলোয়াড় রয়েছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ শুধুমাত্র মার্কিন ভিডিও গেম শিল্পেরই আনুমানিক মূল্য ১০৭.৬ বিলিয়ন ডলার। প্রকৃতপক্ষে, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ দেশগুলির (৩,৪৭১) মিলিত সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি সক্রিয় ই-স্পোর্টস খেলোয়াড় (৩,৪৩০) রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

আগে যেখানে গেমিং ছিল কনসোল ও কম্পিউটার নির্ভর, এখন তার সবচেয়ে বড় অংশ হয়ে উঠেছে মোবাইল গেমিং। Subway Surfers, PUBG Mobile, Free Fire, Candy Crush—এইসব গেমের মাধ্যমে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সবাই গেমিংয়ে অংশ নিচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছে ছাত্র, চাকরিজীবী, গৃহিণী এমনকি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও। তবে এই গেমিং প্রবণতা নিয়ে অনেকের উদ্বেগও রয়েছে। অতিরিক্ত গেম খেলার ফলে আসক্তি, চোখের সমস্যা, মানসিক চাপ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। তাই অভিভাবক ও তরুণদের সচেতনভাবে গেম খেলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।