দানবের উপস্থিতি আরো অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠলো : ফারুকী
সিসি ফুটেজ তদন্তে চারুকলার ফ্যাসিস্ট মোটিফের ‘রহস্যজনক’ আগুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এছাড়া আংশিক পুড়েছে আরেকটি মোটিফ ‘শান্তির পায়রা’। বিষয়টি নিয়ে ফের সরগরম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া।
ফেসবুকে নিজের পেজে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ">মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন, হাসিনার দোসররা গতকাল ভোররাতে চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুড়িয়ে দিয়েছে। এই দুঃসাহস যারা দেখিয়েছে- সফট আওয়ামী লীগ হোক বা আওয়ামী বি টিম হোক- তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আসতে হবে, দ্রুত।
‘এই শোভাযাত্রা থামানোর চেষ্টায় আওয়ামী লীগের হয়ে যারা কাজ করছে, আমরা শুধু তাদের আইনের আওতায় আনবো তা না, আমরা নিশ্চিত করতে চাই এবারের শোভাযাত্রা যেন আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়। ’
ফারুকী লিখেছেন, গতকাল রাতের ঘটনার পর হাসিনার দোসররা জানিয়ে দিয়ে গেল বাংলাদেশের মানুষ এক হয়ে উৎসব করুক তারা এটা চায় না। আমরা এখন আরও বেশি ডিটারমাইনড এবং আরো বেশি সংখ্যায় অংশ নেবো।’
‘গত কিছুদিন জুলাই আন্দোলনের পক্ষের অনেকেই বলেছিলেন, এবারের শোভাযাত্রা সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভিন্ন রকমের হচ্ছে। এখানে ফ্যাসিবাদের ওই বিকট মুখ না রাখাই ভালো। আমরাও সব রকম মত নিয়েই ভাবছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মত জানার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু গতকালকের ঘটনার পর এই দানবের উপস্থিতি আরো অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠলো’- যোগ করেন তিনি।
শুধু দুটি মোটিফে আগুন লাগার ঘটনা রহস্যজনক বলছে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আজ শনিবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৫টা ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। পুলিশ বলছে, আশেপাশের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ডিভিআর সংগ্রহের কাজ চলছে। ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা হবে। ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ঘটনাস্থল ও আশেপাশের একাধিক সিসি ক্যামেরার ডিভিআর সংগ্রহের কাজ চলছে। ডিভিআরগুলো থেকে ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদও জানিয়েছেন একই কথা। বলেছেন, ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি’র মোটিফটির সঙ্গে ‘শান্তির পায়রা’র একটি মোটিফও পুড়ে গেছে। কিন্তু কে বা কারা আগুন দিয়েছে এখনও আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করার চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে এবার নববর্ষের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি।’ এটির উচ্চতা ২০ ফুট। এই মোটিফে বাঁশ ও বেত দিয়ে দাঁতাল মুখের এক নারীর মুখাবয়ব বানানো হয়। মাথায় খাঁড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশালাকৃতির নাক ও ভয়ার্ত দুটি চোখ। এটিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি হিসেবে ধারণা করেছিলেন অনেকে।