যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোয় বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্ত হতে পারে প্রযুক্তি

৩ এপ্রিল, ২০২৫  
৩ এপ্রিল, ২০২৫  
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোয় বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্ত হতে পারে প্রযুক্তি

বাংলাদেশি পণ্যের ওপরে ৩৭ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে বাংলাদেশি রফতানি পণ্য বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব কতটুকু পড়তে পারে এ বিষয়ে কাজ করছে সরকার।

বাংলাদেশি পণ্য ওপর আগে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ছিল ১৬ শতাংশ। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যেমন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তেমনই বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপরও শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন-ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ৪৪ শতাংশ বা মিয়ানমারের ওপর ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। ফলে রফতানির ক্ষেত্রে এর প্রভাব কী পড়তে পারে সেটি হিসাব করে বের করতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানিতে বাণিজ্য ঘাটতির ওপর নজর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে যুক্ত করার কথাও আসছে। উঠেছে ট্যারিফ পুনর্মূল্যায়নের। আলোচনা এসেছে দেশের আইসিটি কার্ড থেকে যুক্তরাজ্যের রপ্তানি করা ৫ বিলিয়ন ডলার অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারি ফাইজ তাইয়েব আহমেদ লিখেছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন নতুন ঘোষিত শুল্ক হার্ডলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছে, বাংলাদেশ শুল্ক কাঠামো হ্রাস করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। আমাদের ইপিজেড, বিশেষ ইপিজেড, হাই-টেক পার্কগুলিতে, আমরা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সহজ নিবন্ধন, রপ্তানি প্রণোদনা, নিরাপদ জমি, মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ, নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট এবং অত্যন্ত নমনীয় ডেটা সেন্টার, অবকাঠামো এবং ক্লাউড নীতি প্রদান করব।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের শুল্ক পর্যালোচনা করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্রুত শুল্ক যৌক্তিকীকরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জরুরি বিভিন্ন বিকল্প চিহ্নিত করছে।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে আসছি। আমাদের চলমান প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সমন্বিতভাবে শুল্কসংক্রান্ত এই বিষয়টির সমাধানে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অপরদিকে ওয়াশিংটনের একটা সূত্র জানায়, এ বিষয়ে এখন আরও জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। আগামী তিন থেকে ছয় মাস এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ বেশি রফতানি করে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখন বেশি পণ্য আমদানি করে আমাদের দেখাতে হবে যে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও কমছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, আমরা সয়াবিন তেল, তুলা, গম অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করি। এ সময় আমরা যদি কিছুটা বেশি পরিমাণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করি তাহলে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ কমে আসবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি পন্য আমদানিতে মনোযোগী হওয়া যেতে পারে। মোটকথা আমাদের এখন দেখাতে হবে, আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর বিষয়ে সিরিয়াস।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক পণ্য বেশি রফতানি করে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ, বিমানসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে থাকে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি করেছে।