ফলোআপ

প্রতিযোগিতা কমিশনে জিপি’র আবেদন নাকচ

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:৪৫  
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:৫৭  
প্রতিযোগিতা কমিশনে জিপি’র আবেদন নাকচ

প্রতিযোগিতা লঙ্ঘনে করা অভিযোগের  অনুসন্ধান ও বিচারে প্রতিযোগিতা কমিশনের এখতিয়ার নেই বলে মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়েটা ও বাংলালিংকের করা অভিযোগ প্রত্যাহারে করা গ্রামীণফোনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন কমিশন। রাজধানীর বোরাক টাওয়ারে ১৭ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে অনুষ্ঠিত শুনানির রায়ে ২২ সেপ্টেম্বর, সোমবার দেয়া রায়ে গ্রামীণফোনে আবেদন খারিজ করে রবি’র পক্ষে রায় দিয়েছেন কমিশন চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। তার নেতৃত্বে কমিশনের আরো তিন সদস্য -ড. আক্তারুজ্জামান তালুকদার, ওয়াহিদ হাসান শাহ এবং আফরোজা বিলকিস রায় দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন। 

রায়ে বিচারক বলেছেন, প্রতিযোগিতা লঙ্ঘন করার বিষয় প্রতিযোগিতা কমিশনই খতিয়ে দেখবে। তদন্ত অনুযায়ী মামলা ও বিচার করতে কমিশনের কোনো বাধা। এটা বিটিআরসি’র বিষয় নয়। বিটিআরসি রেগুলেটরের ভূমিকা পালন করবে। আর প্রতিযোগিতা কমিশন বাজারে নেতিবাচক প্রভাব দূর করতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।  

এই রায়ের ফলে এখন প্রভাবশালী (SMP) অপারেটর হওয়ার কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার গ্রামীণ ফোন অস্বাভাবিক কম দামে সিম বিক্রি করে বাজার দখলের চেষ্টা করছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তার তদন্ত সহসাই শুরু হবে। এজন্য শিগগিরই পরবর্তী শুনানির তারিখ দিয়ে তদন্তের বিষয় জানানো হবে। এছাড়া তদন্তে দোষ পেলে অপারেটরটির বিরুদ্ধে মামলাও করবে। 

রায় নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে রবি’র পক্ষের আইনজীবি ব্যারিস্টার সামির সত্তার বলেছেন, প্রতিযোগিতা কমিশন যুক্তি তর্ক ও আইনি ধারায় অকাট্য প্রমাণ পাওয়ায় রবি’র পক্ষে রায় দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, বাজারের নেতিবাচক বিষয় দেখার এখতিয়ার বিটিআরসি’র নয়। এটি প্রতিযোগিতা কমিশনই করবে। এ জন্য গ্রামীণফোন যে আবেদনটি করেছিলো তা রায়ে বাতিল করে দিয়েছেন বিজ্ঞ কমিশন। 

এ বিষয়ে রবি আজিয়াটা পিএলস ‘র চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেছেন, বাজার প্রতিযোগিতা ব্যবস্থার অপব্যবহার এবং প্রতিযোগিতা-বিরোধী অনুশীলনের অভিযোগের তদন্ত যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে প্রতিযোগিতা কমিশনের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। এটি বাজারে সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যেখানে উদ্ভাবন এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতা গ্রাহকদের এবং সামগ্রিকভাবে শিল্পের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আমরা কমিশনকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা জোরদার করে এমন নীতি ও অনুশীলনের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন জানায়, “আমরা জানতে পেরেছি যে একটি আদেশ জারি হয়েছে। তবে আমরা এখনও আদেশের কোনো প্রত্যয়িত অনুলিপি পাইনি, তাই এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত মন্তব্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও আমরা দৃঢ়ভাবে আবারও বলতে চাই, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের প্রচলিত প্রতিযোগিতা আইন মেনে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। গ্রামীণফোন কোনোভাবেই প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত নয়। মূল্য নির্ধারণ, বিপণন এবং বিতরণ সম্পর্কিত সকল অভিযোগ আমরা সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার করি।  আমাদের দেশের টেলিযোগাযোগ খাতটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ২০০১ সালের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী পরিচালিত এই খাত ন্যায্য প্রতিযোগিতা, উন্মুক্ত বাজার এবং গ্রাহকের অধিকার নিশ্চিত করে। বিটিআরসি একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাজারে প্রবেশ, মূল্য নির্ধারণ এবং সকল প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের তদারকি করে থাকে। গ্রামীণফোন বর্তমানে একটি এসএমপি অপারেটর হিসেবে আইনানুগভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা অসম এমএনপি লক-ইন, ক্যাম্পেইন অনুমোদন, ইন্টারকানেকশন চার্জসহ আরও কিছু কঠোর নিয়ন্ত্রক নির্দেশনার সুনির্দিষ্ট ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছি। এমন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং নেতিবাচক প্রতিযোগিতামূলক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন।" 

গ্রামীণফোনঃ প্রতিযোগিতা কমিশনের রায় সোমবার