ওএমআর মেশিনের স্বচ্ছতা ও সিসিক্যাম, বডিক্যাম ব্যবহারের প্রস্তাব

ভোটে প্রযুক্তি নিরেপক্ষতার দাবি ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের

৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  
ভোটে প্রযুক্তি নিরেপক্ষতার দাবি ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ন্যায়সংগত, প্রযুক্তিনির্ভর ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে এ নির্বাচন সুষ্ঠু নির্বাচনের একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)। এক্ষেত্রে ভোট গণনায় ব্যবহৃত ওএমআর মেশিনের নিরপেক্ষতা নিয়ে যাতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে, এজন্য বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি অফিসিয়াল এক্সপার্ট টিম গঠন করার পরামর্শ সহ  ১০টি প্রস্তাবনা দিয়েছে সংগঠনটি। 

৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার দুপুরে সিনেট ভবনস্থ নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানীর কাছে এই প্রস্তাবনাগুলো দেওয়া হয়। এসময় ইউটিএল-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাসসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও প্রক্টরের কাছে এসব প্রস্তাবনা দেওয়া হবে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। 

প্রস্তাবনার দ্বিতীয় প্যারায় ওএমআর মেশিনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি অফিসিয়াল এক্সপার্ট টিমের মাধ্যমে নির্বাচনের দিন সকালে ও ভোট শেষে অডিট ট্রায়াল বাধ্যতামূলক করা পরামর্শ দেয়া হয়। বলা হয়েছে, ট্রায়ালের সময় পর্যবেক্ষক, এজেন্ট ও সাংবাদিকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করলে স্বচ্ছতার বিষয়ে সবার আস্থা বাড়বে। একইসঙ্গে ভোট গণনার সময় বড় স্ক্রিনে ফলাফল প্রদর্শন করলে প্রক্রিয়াটি সর্বসাধারণের কাছে উন্মুক্ত থাকবে বলেও মনে করেন ইউটিএল।

এতে বলা হয়েছে, প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও ওএমআর কাউন্টিং মিলিয়ে দেখা নিশ্চিত করতে হবে। ফলাফল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ ও অনুমোদিত কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরসহ ডকুমেন্ট আকারে সরবরাহ করলে অনিশ্চয়তা ও গুজব কমে যাবে। ফলাফল ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এছাড়াও ক্যাম্পাস ও ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা সচল আছে কিনা. তা পরীক্ষা ও নিশ্চয়তা; বডি ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ রেকর্ড করা এবং অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে তা ব্যবহারের প্রস্তাব রয়েছে এতে।

নির্বাচনকালীণ কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও সহায়তায় ভোটের আগের রাত থেকে নির্বাচন শেষ হয়ে ফলাফল ঘোষণার পর পর্যন্ত একটি কেন্দ্রীয় হেল্পলাইন/কন্ট্রোল রুম চালু রাখার কথাও বলা হয়েছে। প্রস্তাবনার সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শিক্ষকদের নেটওয়ার্কের দাবিতে বলা হয়েছে, সকল কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সাপোর্ট ডেস্ক থাকতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা কিংবা প্রার্থীরা যেকোনো অভিযোগ করতে পারেন। কেন্দ্রীয় মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে হবে এবং সেখানে পর্যাপ্ত ফোন নম্বরের সংযোগ রাখতে হবে। এই নম্বরগুলো সকল পোলিং ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে দিতে হবে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা দ্রুত কেন্দ্রীয় সাপোর্ট ও নির্দেশনা পেতে পারেন। ফোন নম্বরের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ/টেলিগ্রাম গ্রুপ বা ই-মেইল সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করা যেতে পারে যাতে দ্রুত রিপোর্ট করা যায়। 

একইসঙ্গে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ভোটের অগ্রগতি ও পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমে রিপোর্ট করতে হবে। কন্ট্রোল রুম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা প্রক্টরিয়াল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হতে হবে। মনিটরিং সেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক, পর্যবেক্ষকগণের প্রতিনিধি এবং পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকবেন। প্রতিটি অভিযোগ বা কল রেকর্ড নথিভুক্ত করতে হবে, যাতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রগুলো সরাসরি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।