ফুডপান্ডার এমডিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা

প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও হুমকির অভিযোগে ফুডপান্ডা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দা আমবারীন রেজাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করা হয়েছে। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সানাউল্লাহর আদালতে দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলে-
আসামিরা হলেন- সৈয়দা আমবারীন রেজা, কো ফাউন্ডার ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফুডপান্ডা বাংলাদেশ লিমিটেড; জুবায়ের সিদ্দিকী কো ফাউন্ডার ও ডিরেক্টর; মো. তাবারেজ খান (ভারতীয় নাগরিক) ডিরেক্টর ডেলিভারি (হিরো স্টোর); দিলারা ফারুক (হেড অব ক্যাটাগরি); মোহাম্মদ সাজেদুল হক (সিনিয়র ম্যানেজার ও ডিরেক্টর) ডেলিভারি হিরো স্টোর; মোহাম্মদ তৌফিক এক্সিকিউটিভ ক্যাটাগরি ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর ডেলিভারি হিরো স্টোর বাংলাদেশ লিমিটেড, পান্ডামার্ট।
ফার্স্ট টেলি সেলস কোম্পানির স্বত্বাধিকারী শিহাব মাহমুদ বাদী হয়ে আদালতে মামলাগুলো করেন। বাদীর আইনজীবী কাজী মফিজুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন।
বাদীর আইনজীবী সূত্রে প্রকাশ, ফুডপান্ডার সহযোগী প্রতিষ্ঠান পান্ডামার্টের সঙ্গে ব্যবসা করেন শিহাব মাহমুদ। পৃথক পৃথক চুক্তি অনুযায়ী এই ব্যবসা করার কথা। কিন্তু চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পান্ডামার্টের তথা ফুডপান্ডার কর্মকর্তারা বাদীর ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন। এ কারণে এই মামলা করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ফুডপান্ডা ও পান্ডামার্টের অভিযুক্ত কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে পিএনপি-কে বিদেশি পণ্য সরবরাহের জন্য প্রলুব্ধ করেন। পিএনপি ওই পণ্য সরবরাহ করলেও, অভিযোগ মতে, ফুডপান্ডা ৫কোটি ৮০ লাখ টাকা বকেয়া রাখে।
বাদী শিহাব মাহমুদ বশিরের অভিযোগ, ফুডপান্ডার কর্মকর্তারা প্রভাব খাটিয়ে পণ্য নষ্ট দেখিয়ে ভুয়া ফেরত চালান তৈরি করেন, অথচ সরবরাহকৃত পণ্য গ্রহণের সময় গুণগত মান যাচাই করেই গ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া, নামমাত্র এক-দুই বা একশ টাকার কম পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে বাকী পাওনা গড়িমসি করেন। তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকিরও অভিযোগে আগেও আলোচনায় এসেছে, যা এনবিআর-এর বিভিন্ন তদন্ত ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
তার দাবি, একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরও পাওনা পরিশোধ না করে সম্প্রতি তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে তিনি গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এছাড়া হঠাৎ করে ক্রয় আদেশ বন্ধ করে দেওয়ায় তার গুদামে সংরক্ষিত পণ্য মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে নষ্ট হয়, এতে তার আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্যবসায়ী শিহাব মাহমুদ বশির বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডা ও পান্ডামার্ট প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। আমি একা নই এ ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরও বহু ভুক্তভোগী। আমি আইন ও আদালতের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশায় আমি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
জানতে চাওয়া হলে এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে ফুডপান্ডা। বলা হয়েছে, ফুডপান্ডা ও এর কর্মীদের সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশে এ মামলা করা হয়েছে। এসব ‘মিথ্যা অভিযোগ’ ও ‘অপচেষ্টার’ বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছে এই আন্তর্জাতিক খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।