শাবিপ্রবিতে ‘মাত্রাতিরিক্ত’ ভর্তি ফি'র বিরুদ্ধে ছাত্রদল-শিবির

স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ফি হিসেবে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এই ফিতে ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলে মন্তব্য করছেন ভর্তিচ্ছুরা। তাদের মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করে নির্ধারিত ফি কে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে দ্রুত ফি কমানোর দাবি জানিয়েছে শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।
ছাত্রদলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করে দেখছি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর সাধ্যের বাহিরে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এ অযৌক্তিক ফি নির্ধারণের জন্য তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং দ্রুত সময়ের ভিতরে এ অযৌক্তিক ফি কমিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছে।
একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্ধারিত ভর্তি ফি মাত্রাতিরিক্ত উল্লেখ করে নতুন করে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য ভর্তি ফি নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির শাবিপ্রবি শাখা। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১৫ এপ্রিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। গত সেশনে গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকাকালীন ভর্তি ফি-র চেয়ে এবছর ভর্তি ফি খুবই নগণ্য পরিমাণ কমানো হয়েছে কিন্তু সেটিও গুচ্ছ পদ্ধতির পূর্ববর্তী সময়ের ভর্তি ফি-র চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি, যা পরিশোধ করা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সাধ্যের বাইরে। গত কয়েক বছরের মাঝে ভর্তি ফি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করা কোনভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না।
মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি ফি নির্ধারণের নিন্দা জানিয়ে শাখা শিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার এবং সেক্রেটারি মাসুদ রানা তুহিন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করে দেওয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের অযৌক্তিক ভর্তি ফি উচ্চশিক্ষার পথকে কঠিন করে তুলবে। ইতিপূর্বেও আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্যে উপাচার্য মহোদয়ের নিকট ৫২ দফা সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করে ভর্তি ফি সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। তাই আমরা দ্রুত সময়ের মাঝে নতুন করে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য ভর্তি ফি নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি।
অপরদিকে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়া, বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার কেন্দ্র থাকা ও ভর্তি সংক্রান্ত জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে এ প্রশাসনিক বৈঠকে এই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাবিপ্রবি ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, বুধবার (৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবজেক্ট নির্বাচন ও ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার্থীকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল ট্রান্সক্রিপ্ট (মার্কশিট) সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। ভর্তির জন্য ফি বাবদ ১৭ হাজার টাকা সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীর ব্লাড-গ্রুপের যথোপযুক্ত প্রমাণপত্র নিয়ে আসতে হবে। সাবজেক্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের মেধাক্রম অনুযায়ী ডাকা হবে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করেছেন এবং দ্রুত ফি কমানোর দাবি জানিয়েছেন। ফি না কমালে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাওসহ ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যপাক সমালোচনা চলছে।