লাইভে শিশু নির্যাতনের দায়ে ফেসবুক উদ্যোক্তা ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে মামলা

ফেসবুক লাইভে নিজ সন্তানের ‘নিষ্ঠুর’ ব্যবহারের দায়ে ‘ক্রিম আপা’ খ্যাত সাভারের বাইপাইলের অনলাইন উদ্যোক্তা শারমিন শিলার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্থানীয় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা। শিশুদের সুরক্ষায় সামাজিক আন্দোলন ‘একাই একশো’ এর পক্ষ থেকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৯ এপ্রিল) আশুলিয়া থানায় এই মামলা করেছেন সাভার উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান।
বৃহস্পতিবার মামলার কথা নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানিয়েছেন, মামলার তদন্তের পাশাাপাশি আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
তবে মামলার পর টিকটকে সপরিবারে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন এই নারী উদ্যোক্তা। বলেছেন, ’আমাদের মৃত্যুর আগে ডায়রিতে লিখে যাবো। দেশ-বিদেশে সবার কাছে বিচার চাবো। আপনারা মনে রাইখেন।’
জানাগেছে, সাভারের বাইপাইলে ‘ক্রিম আপা বিউটি পার্লার’ নামে শারমীন শিলার একটি পার্লার আছে। এছাড়া তিনি ফেসবুকে রং ফরসার ক্রিম বিক্রি করেন। তবে নানা বিতর্ক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায় সময় আলোচনায় থাকেন তিনি।
‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভিউ বাড়ানো ও টাকা আয়ের জন্য তিনি তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। কখনো মাথা ন্যাড়া করে, আবার কখনো ভারী কানের দুল লাগিয়ে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে দেন। এর বাইরে কী রান্না করছেন, কী খাচ্ছেন- এসব নিয়ে করা বিভিন্ন ভিডিওতে মেয়েকে হাজির করেন ‘ক্রিম আপা’। তখন মেয়ে ভয়ে চুপ করে থাকে। কখনো হাসে আবার কখনো অস্বাভাবিকভাবে কাঁদে। মেয়েটি আতঙ্কগ্রস্ত দেখা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে প্রকাশ, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। তিনি মূলত মেকআপের জন্য বিভিন্ন ক্রিম তৈরি করে তা বিক্রি করেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি তার সন্তানদের নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করেন। গত ৩ মার্চ বিকেল ৪টায় তার ফেসবুক আইডি থেকে দেয়া এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, শারমিন শিলা তার মেয়ে জিমকে (বয়স ২ বছর) জোর করে মুখ হা করিয়ে কেক জাতীয় খাবার দিচ্ছে। মেয়ে খেতে চাচ্ছিল না, এজন্য তিনি জোর করে মেয়ের মুখের চাপ দিয়ে কেক জাতীয় খাবার দিতে থাকেন। শিশুদের আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলা, ও মাতৃসুলভ আচরণ বর্জন করে শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছেন ক্রিম আপা। ফলে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ওই আসামির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।