বুধবার বসছে দেশের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সিম্পোজিয়াম বিয়ার ২০২৫

১৬ জুলাই, বুধবার শহীদ আবু সাঈদ দিবসে রাজধানীর ন্যাশনাল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কমপ্লেক্স বসছে দুই দিনের ‘বিয়ার’ সামিট ২০২৫। বায়োটেক, ইলেকট্রনিক্স, এআই এবং রোবটিকস নিয়ে প্রথমবারে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর সিম্পোজিয়ামে অংশ নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মিডিয়াটেক, এসকে হাইনিক্স, স্যানডিস্ক, গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজ, টোকিও ইলেকট্রনিক্স এবং ইনোভেক্স এর মতো বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদের দায়িত্ব পালনকারী প্রবাসী বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী এবং সরকারের নীতি নির্ধাকেরা।
পরিসংখ্যান বলছে, এই সম্মেলনে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ৪০ শতাংশ থাকছেন শিক্ষক ও শিল্প বিশেষজ্ঞ। ৩০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ যুক্ত হবেন ভার্চুয়ালি। উদ্বোধনীতে ভিডিও বার্তায় সেমিকন্ডাক্টর খাতে জাতীয় উদ্ভাবন ও সামাজিক আন্দোলনের ওপর গুরুত্বারোপ করবেন বলে জানানো হয়েছে সিম্পোজিয়াম উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে।
১৫ জুলাই, মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
আইসিটি সচিব শীষ হায়দারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনের আহ্বায়ক ও পারডিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোঃ মোস্তফা হোসাইন বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও অংশগ্রহণকারীদের দায় থেকেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা ব্রেইন ড্রেইন কিংবা চিপ জব থেকে বেরিয়ে তরুণদের অপার সম্ভাবনা ও সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে আমরা দেশেই আগামীর নেতৃত্বে থাকা সেমিকন্ডাক্টর খাতে নিজস্ব উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমি এ নিয়ে খুবই আশাবাদী। ইতিমধ্যেই আমরা বিশ্বের শীর্ষ ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ৯জন বিশেষজ্ঞ সেমিনারে যোগ দিচ্ছেন। এখানে যুক্ত হচ্ছেন শীর্ষ সেমিকন্ডাক্টর শিল্প বিশেষজ্ঞরাও। এছাড়াও সিম্পোজিয়ামে অংশ নেবে দেশের সবগুলো সেমিকন্ডাক্টর শিল্প উদ্যোক্তারা। আমরা টাকা দিয়ে নয়, বিশেজ্ঞ ধারণা ও উদ্ভাবন এবং নীতিগত সহায়তার মাধ্যমে জাতীয়ভাবে এই খাতকে ওপরের দিকে নিয়ে আসতে চাই। সম্মেল উপলক্ষে জমা পড়া ৩০০টির বেশি পোস্টার ও লাইভ ডেমো থেকে সে বিষয়টি জানতে পারবেন অংশগ্রহণকারীরা। আমরা চাই এই সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিষয়ক জাতীয় কৌশল নির্ধারণ এবং আইপি অফিস স্থাপন করে তরুণদের মেধা ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আইসিটি সচিব জানান, বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে সবচেয়ে কম বাজেটে এতো বড় একটা সিম্পোজিয়াম আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ইডিজিই প্রকল্প। এক কোটির সামান্য কিছু বেশি অর্থে বিদেশ থেকে বিশেজ্ঞদের দেশে এনে এই আয়োজন করা হয়েছে। এটা একটি বড় কাজের সূচনা। নিবন্ধন চালু করলে ২৫০ জন করলেও আমাদের সংস্থানের সুযোগ আছে মাত্র ১৫০ জন শিক্ষার্থীর। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন, সব কিছুতেই এআই, রোবটিকস ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে এই সেমিনারে আমরা বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি রাজনীতিকরাও অংশ গ্রহণে কমিটমেন্ট করেছেন। আমরা আগামী মাসে এআই নীতিমালা ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক চূড়ান্ত নীতিমালা প্রকাশ করবো। দেশের সেমিকন্ডাক্ট খাতের উন্নয়নে এরই মধ্যে আমরা খাতসংশ্লিষ্ট শিল্পকে ১০-১৫ বছর কর অবকাশ, আমদানি শুল্ক ছাড় এবং স্পেশাল বন্ডেড ওয়ারহাউস, জাহাজীকরণে ফাস্ট ট্রাক ক্লিয়ারিং সুবিধা ও রফতানিতে ৫-১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করেছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, সেমিকন্ডাক্টর বিশেজ্ঞ ও ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডার্স এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মাহবুব রাশেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।