ড্রোন-শো-তে দ্রোহ-বিপ্লবের উপাখ্যান

১৫ জুলাই, ২০২৫  
১৫ জুলাই, ২০২৫  
ড্রোন-শো-তে দ্রোহ-বিপ্লবের উপাখ্যান

জোনাকী আলোর মতো ১৪ জুলাই দিনগত মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আকাশে জ্বলে উঠলো জুলাই আখ্যান। দুই হাজার ড্রোনের কসরতে ফুটিয়ে তোলা হলো ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের অনাচারের স্বারক ও দ্রোহের স্লোগান।  গুমের শিকার - ইলিয়াস আলী থেকে শুরু করা নতুন বাংলাদেশ মুক্ত হওয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আযমী ও মাইকেল চাকমার ছবির পাশাপাশি শাপলা ম্যাসাকার, আবরার ফাহাদ এর মতো শহীদদের কথা ফুটে উঠেছে ড্রোন শো-তে। 

জুলাই অভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ আবু সাইদ এবং ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত তন্বীর প্রতিকৃতি এবং পর্দানশীন নারীদের বিক্ষেভো অংশ নিয়ে ‘আওয়াজউডা’ আহ্বান দেখানো হয়েছে আধাঘণ্টা ধরে চলমান ড্রোন শো-তে।   

বাংলাদেশ সরকার এবং চীন সরকারের যৌথভাবে ওড়ানো ড্রোনের প্রোপেলারে ঘুরে ঘুরে ফিরে এসেছে ‘পরাধীনতার দিনগুলি’, শেখ হাসিনার পিঠে বস্তাবন্দি নির্বাচন কমিশনের প্রতিচিত্র- ‘‘রাষ্ট্রীয় মদদে লুট’ কারীদের ছবি, ‘লাইলাতুল ইলেকশন’। শো-তে অভ্যুত্থানে নারীদের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলে তাদের অবদানকে কৃতজ্ঞ চিত্রে স্মরণ করা হয় ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে নিপীড়িত ছাত্রীদের প্রতীক তন্বিকে। 

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েক সহস্র নারী শিক্ষার্থী উপভোগ করেছেন ইতিহাসের এই আলোর বিপ্লব। ড্রোন শো’র আলোকচ্ছটায় জ্বলজ্বল করে উঠল সাহস, সংগ্রাম আর স্মৃতির মুখ। 

এসময় শেখ হাসিনার বিদ্রুপাত্মক উচ্চারণ- ‘তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে?’, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ‘'তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার' স্লোগানকে যেমন স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে; তেমনি 'পোস্ট ডিলিট করো, পরে সমস্যা হবে' টাইপের বাক্য উল্লেখ করে মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে সেই সময়ের ভীতিকর পরিবেশ। সেই ভীতিকে শিকেয় তুলে  ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু' প্রত্যয় কীভাবে এলো সেই বার্তাও উঠে এসেছে ড্রোন-শো-তে।

'মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম' আবহে মিউজিক্যাল ‘ড্রোন শো’টিতে আরো দেখানো হয়- ‘শোনো মহাজন আমরা অনেকজন’ ওথেকে ‘আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাহিরে' স্লোগান।  বিমোহিত দৃষ্টিতে সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে শো-তেই পুরোনো স্লোগান দেন শিক্ষার্থী ও দর্শকেরা। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, এই শো-এর উদ্দেশ্য ছিল ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে সাহসী নারীদের ভূমিকা স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানো। ওই বছর ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে প্রথম বিক্ষোভের ঝাণ্ডা তুলে ধরেন। যেখান থেকে শুরু হয়েছিল একটি ইতিহাস-গঠনের অধ্যায়।