প্রযুক্তির আড়ালে চিকিৎসা দেয়ায় ফার্টিলিটি এক্সপো বন্ধের নির্দেশ

২৭ জুন, ২০২৫  
২৭ জুন, ২০২৫  
প্রযুক্তির আড়ালে চিকিৎসা দেয়ায় ফার্টিলিটি এক্সপো বন্ধের নির্দেশ

বন্ধ্যাত্ব অবসানের আভিএফ বা ইকসি এবং পিজিটি’র মতো স্বাস্থ্য প্রযুক্তি প্রদর্শনীর অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে বসে ভারতীয় ও থাইল্যান্ডের চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা প্রদানের অভিযোগে চলমান ঢাকা ফার্টিলিটি এক্সপো’র স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।

দেশের চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমতি ছাড়াই রাজধানীর  চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক্সপো পরিদর্শন করে এই নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। 
সম্মেলনে দেখা যায়, এক্সপোতে ঈশ্বরিয়া ফার্টিলিটি সেন্টারে ভারতীয় বন্ধ্যা বিশেষজ্ঞ ডা অরুণ ও ডা মুনি পিয়া দম্পতি এবং ডা চন্দ্র লেখা রোগী দেখছেন। যারা আইভিআর করতে আগ্রহী তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট রাখছেন।
সূত্রমতে,  গত ৩ মার্চ ঢাকা ফার্টিলিটি এক্সপো শীর্ষক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও প্রদর্শনীর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আয়োজক প্রতিষ্ঠান ইকো এক্সপো। ২৭ মার্চ মন্ত্রণালয়ের রফতানি-৭ শাখার উপসচিব মো. সাজেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অনুমতি দেওয়া হয়। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি এবং হল বুকিংয়ের কপি দেখিয়ে নিরাপত্তার জন্য গত ২১ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) অবহিত করে আয়োজক প্রতিষ্ঠান।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ডিএমপিতে দেওয়া ইকো এক্সপোর আবেদনে ‘মেলা’ ও ‘প্রদর্শনী’ শব্দ উল্লেখ থাকলেও এতে বিদেশি চিকিৎসকরা রোগী সেবা দেবেন— এমন কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া বাংলাদেশে চিকিৎসার পেশাগত নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বিএমডিসির কোনো অনুমোদনও নেওয়া হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা ফার্টিলিটি এক্সপো চালানোর জন্য আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়েছে। পুলিশের কাছে অনুমতি নেয়নি, শুধু অবহিত করেছে। তারা বলেছে মেলা, কিন্তু আসলে মেলা না। মেলার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা, কাউন্সিলিং এবং বিদেশে যাওয়ার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি মৌখিকভাবে বলে এসেছি, আপনারা এটি বন্ধ করেন। একইসঙ্গে দাপ্তরিক একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘মেলার অনুমতি আছে। সেটি যদি টেকনোলজি প্রদর্শনী বা শেয়ারিং হয়, সেটি এক জিনিস। কিন্তু চিকিৎসা সম্পর্কিত কোনো অনুমতি নেই। ফলে এক্সপোর আড়ালে রোগী দেখা, চিকিৎসা দেওয়া এবং রোগীদের ভারত যাওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করা— এটি যেন না হয়। আমাদের কথা যদি না মানে, তাহলে কালকে মোবাইল কোর্ট হবে।’

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইকো এক্সপোর উদ্যোগে তিন দিনের মেলা শুরু হয়। এসময় ভারত ও থাইল্যান্ডের চিকিৎসকরা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিকেল তিনটার দিকে মেলাস্থলে যান সিভিল সার্জন।