শাবিপ্রবি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে কমিটি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও অধ্যাপক মো. বেলাল হোসেন শিকদার। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
২০ জুন (শুক্রবার) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান জানিয়েছেন, কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দুপুর ২টা, বেলা সাড়ে ৩টা ও ৫টায় মোট তিন দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বেলা সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, “আমরা ২৪ পরবর্তী সময়ে একটি ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ কল্পনা করেছিলাম। কিন্তু দুঃখ নিয়ে বলতে হয়, যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বারবার নারী অধিকারের কথা বলা হয়, আজ সেখানেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম হয়েছে। এটি শুধু লজ্জার নয়, বিব্রতকরও। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ধর্ষকের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, গত ২ মে রাতে নগরীর একটি ছাত্র মেসে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
মামলায় ঘটনাস্থল হিসেবে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়ার খুলিয়াপাড়ায় এলাকার জান্নাত মঞ্জিল এলাহী বি-৯/২ এর একটি ছাত্র মেসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, একাধিক ব্যক্তি বাদীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। একইসঙ্গে গোপনে তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়, যা তার সামাজিক মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে প্রচার করা হয়।
মামলায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতেই আদনান ও পার্থকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ২৪ সালের ৮ মার্চ ছাত্রলীগের দু-পক্ষের সংঘর্ষের অভিযোগে শান্ত তারা আদনানকে ১১ মার্চ হল থেকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অন্যদিকে, মামলার দুই নম্বর আসামি স্বাগত দাশ পার্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন দিক থিয়েটারের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এ ঘটনার পর তার সাংগঠনিক পদ বাতিল করা হয় বলে সংগঠনটির অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে পোস্টে জানানো হয়। গ্রেফতার আদনান ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামিও।