বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক

গাজায় গণহত্যা বন্ধে সোমবার অনলাইন-অফলাইনে হরতালের ডাক

৬ এপ্রিল, ২০২৫  
৬ এপ্রিল, ২০২৫  
গাজায় গণহত্যা বন্ধে সোমবার অনলাইন-অফলাইনে হরতালের ডাক

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল (সোমবার) বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছে নিপীড়িত গাজাবাসী। গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের সব দেশে একযোগে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গাজাবাসীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ কর্মসূচি সফলের ডাক দিয়েছে নেটিজেন থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা, ইনফ্লুয়েন্সার ও রাজনীতিকরা। 

তবে এজন্য কোনো রাজনৈতিক ব্যানারে নয় বাংলাদেশ ব্যানারে অফলাইনে বিক্ষোভ পালনের পরিকল্পনার কথা জানাগেছে। রবিবার ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গাজার গণহত্যার তিব্র নিন্দা ও বিশ্ব পরাশক্তি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও বিভিন্ন সংগঠনের মুখে কুলুপ এমনকি মুসলিম বিশ্বের নেতাদের এমন নিষ্ক্রিয় ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। পাশাপাশি সারা বিশ্বে অনুষ্ঠিতব্য ফিলিস্তিনের পক্ষে " দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপ ফর গাজা " কর্মসূচির সাথে সংহতি পোষণ করে ৭ তারিখ সমস্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা করছে। একই ঘোষণা দিয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি,ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকেৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত ছাত্র সমাজ, বিএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা, ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি ডিবেটিং ক্লাব প্রমুখ। 

আগামীকাল ৭ এপ্রিল, ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ এর সাথে একাত্মতা পোষণ করে রুটিমেকার উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম নিজে সজ সবাইকে এই দিন ফেসবুক অ্যাডস অফ রাখে ‘স্ট্রাইক; পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।  

গাজাবাসীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ইংরেজি অক্ষরে ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’ অর্থাৎ গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ ও স্কুল বন্ধ। ’ ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, সংহতি জানাই। আগামীকাল ৭ এপ্রিল ইসরায়েলি দখলদারিত্ব এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে যোগ দিন। ’

সোমবার বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। নিজের ফেসবুক পোস্টে এ তরুণ নেতা লিখেছেন, মানুষ ও মুসলিম হিসেবে এসব (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-অফিস-আদালত) বন্ধ রাখাতেই আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয় বরং দলমত নির্বিশেষে সারাদেশের ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে ইসরায়েলি খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে আমাদের গাজার ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারবো না। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করতে নিজ ভূমির রাজপথে অন্তত নামতে পারবে।

তিনি বলেন, এনসিপি, বিএনপি জামায়াত বা কোনো (রাজনৈতিক) দলের ব্যানারে নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে আগামীকাল আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। প্রত্যেক জেলায় ছাত্রজনতার প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন মিলে দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালিত হোক। ৭ এপ্রিল কোনো দল, মত, পক্ষের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশের পক্ষ হতে গাজার মজলুম মানুষের পক্ষে হোক।

একই আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুকে পেজে তিনি লিখেছেন, গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হোন। আগামীকাল সোমবার, ৭ এপ্রিল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’— এই কর্মসূচি সফল করুন।   

কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিভিন্ন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে প্রতিবাদী হ্যাসট্যাগ ও গ্রাফিতি দিয়েও প্রতিবাদের অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের নেটিজেনরা।