রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে হামলাকারীরা চিহ্নিত!

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  
রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে হামলাকারীরা চিহ্নিত!

ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তারই ধারাবাহিকতায় ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ শিরোনামে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ছাত্র কল্যাণ ওয়েলফেয়ার সেন্টারে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হামলার চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রদর্শনীতে প্রায় ১০০ ছবি স্থান পেয়েছে। শুধু আহত না, হামলাকারীদের ছবিও রাখা হয়েছে প্রদর্শনীতে।

প্রদর্শনীতে শতাধিক ছবি স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীর এসব ছবিতে ফুটে উঠেছে বহিরাগতদের হামলায় আহত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও হামলাকারীদের ছবি। শুধু আহত এবং হামলাকারীদের ছবি নয়, প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে সংঘর্ষ পরবর্তী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আন্দোলনের ছবিও। 

ছবির প্রদর্শনীতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী সহপাঠীদের রক্তাক্ত আহতদের ছবি দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৩ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আজ আমরা ছবি প্রদর্শনী কর্মসূচি পালন করেছি। এখানে শুধু আহতদের না, হামলাকারীদের ছবিও আছে; যাতে তাদের শনাক্ত করা যায়।

শিক্ষার্থীদের মতে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চলছে, তার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই প্রদর্শনী হামলাকারীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি দেশের জনগণের কাছে ঘটনার প্রকৃত বিবরণ তুলে ধরতে সহায়তা করবে। তারা বিশ্বাস করেন, ছবিগুলোর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্তে সহায়তা পাবে।

একটি ছবিতে হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হামলাকারীদের ছবি রয়েছে, যা কর্তৃপক্ষের জন্য সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করতে সহায়ক হবে বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। তারা আরও বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে, তবে আমরা হামলাকারীদের পরিচয় সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। সুতরাং হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা যেন কেউ করতে না পারে, সেজন্য এই ছবিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ প্রদর্শনী শুধু ঘটনার চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমই নয়, বরং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৮ ফেব্রুয়ারিতে কুয়েটের ছাত্রদল ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এরপর বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে, কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হামলা ও ছাত্র রাজনীতির কুফল নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়, যা গতকাল শুরু হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাস এবং ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে লালকার্ড প্রদর্শন করে।