মেটার বৈশ্বিক প্রধানকে কী বলবেন ড. ইউনুস?

২২ জানুয়ারি, ২০২৫  
মেটার বৈশ্বিক প্রধানকে কী বলবেন ড. ইউনুস?

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সামিটে যোগ দিতে চার দিনের সরকারি সফরে সুইজারল্যান্ড সফর করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরের প্রথম দিনেই মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সামিটের সাইডলাইনে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।

সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের কন্যা শেখা লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড, মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল ড. অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক ড. এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালার সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হবেন প্রধান উপদেষ্টা।

এসব সফরের মধ্যে তৃতীয় দিন বাংলাদেশে মেটার কার্যক্রম চালু করতে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগ এর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে মেটাকে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রযুক্তিকে আরও সহজ করতে এবং ফেসবুককে বাংলাদেশে আরো কার্যক্রম বাড়াতে অনুরোধ করার বিষয়ে বাংলাদেশে ডেটা সেন্টার ও অফিস স্থাপনে সরকারের পক্ষ থেকে নীতি সহায়তা দেয়ারও আশ্বাস দিতে পারেন।

কূটনৈতিক সূত্রে প্রকাশ, মেটা গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠকটি হবে সাইডলাইন বৈঠক। তবে চার দিনের সফরে ঠিক কোনদিন ও সময়ে হবে তা এখনো প্রকাশ করা যাচ্ছে না। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৩ জানুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ড. ইউনুসের সাথে যদি মেটার প্রেসিডেন্টের ফলপ্রসু আলোচনার মাধ্যমে ঢাকায় ফেসবুকের ডাটা সেন্টার স্থাপন কিংবা অফিস নিয়ে কথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে এ অর্জন হবে সত্যি এক বিস্ময়কর অর্জন।

এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন মেটার পরিচালক (মানবাধিকার নীতি) মিরান্ডা সিসন্স। সেই বৈঠকে

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে নস্যাৎ করতে কিছু দেশ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মেটা পরিচালক সিসন্স প্রধান উপদেষ্টাকে তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেউ যেন বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেজন্য তারা সতর্ক বলে জানিয়েছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিষয়ে পৃথক ডায়লগের আয়োজন থাকবে। এ ডায়লগের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী নেতাদের কনফিডেন্স বাড়াতে এ সফর সহায়ক হবে মনে করছে সরকার।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগষ্টের পর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৮ রাষ্ট্রদূতের সাথে ঢাকায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। সেই বৈঠকে ড. ইউনুস দিল্লীর পরিবর্তে ঢাকায় ইউরোপের অ্যাম্বাসি খোলার অনুরোধ করেন। কারন ইউরোপের বেশিরভাগ অ্যাম্বাসি ভারতের দিল্লীতে অবস্থিত হওয়ায় ভারতে যেতে পারছেন না বাংলাদেশিরা। ভারত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিলে ইউরোপগামীরা বিপাকে পড়েন। অনেকের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কারও কারও ইন্টারভিউ ডেট পার হয়ে গেছে। এতে বড় ধরণের লোকসানে পড়েছে এইখাতের সংশ্লিষ্টরা।

ড. ইউনুসের অনুরোধে ইউরোপের বেশিরভাগ অ্যাম্বাসি বা কনসালটেন্সি অফিস ঢাকায় স্থাপন করা হয়েছে। এখন ইউরোপ গমনেচ্ছুকদের বেশিরভাগেরই আর দিল্লীতে যেতে হয় না। তারা এখন ঢাকায় ভিসা আবেদন জমা দিতে পারেন। এবার ফেসবুকও বাংলাদেশে তাদের কার্যপরিধি বাড়াবে বলে আশা প্রকাশ করা যাচ্ছে। অন্তত বাংলাদেশে ক্যাশ সার্ভার বাড়ানোর পাশাপাশি ডেটাসেন্টার স্থাপনে রাজি হবে বলে আশাবাদ খাত সংশ্লিষ্টদের।