চ্যানেল ওয়ান সম্প্রচারে কোনো বাধা নেই

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ান সম্প্রচার বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে চ্যানেল ওয়ান সম্প্রচারে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
এদিন আদালতে চ্যানেল ওয়ানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, পলাশ চন্দ্র রায়, কাজী আখতার হোসেন, মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, ব্যারিস্টার মারুফ ইব্রাহিম আকাশ এবং মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ।
দেশের বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল ওয়ান’ ১৬ বছর আগে বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার কিছু পর তৎকালীন সরকার ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ বন্ধ করে দেন। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক এবং প্রতিহিংসাবশত শেখ হাসিনা বিটিআরসিকে বাধ্য করে জনপ্রিয় এই গণমাধ্যমটির সম্প্রচারে হস্তক্ষেপ করেন।
পরে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা করেন চ্যানেল ওয়ান কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরাসরি তৎকালীন সরকারের অন্যায় নির্দেশে মামলার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়।
চ্যানেল ওয়ান এর লিগ্যাল অফিসার মিজান-উল হক বলেছেন, ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আবারও মামলা নিয়ে আদালতে গেলে চেম্বার জজ আপিল করার অনুমতি দেন।
প্রসঙ্গত, ‘প্রিয় দর্শক সম্ভাবনার কথা বলে’— এ স্লোগানে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ান। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় দেশ-বিদেশে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে চ্যানেলটি। কিন্তু ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে বিটিআরসি কর্মকর্তারা চ্যানেলটির গুলশান অফিসে গিয়ে সম্প্রচার বন্ধ করে দেন। এতে সেখানে কর্মরত ৪০০ সাংবাদিক, কর্মচারী ও কলাকুশলী বেকার হয়ে পড়েন।
বন্ধের কারণ হিসেবে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, টেলিযোগাযোগ আইন লঙ্ঘন করে চ্যানেল ওয়ান তাদের সম্প্রচার যন্ত্রপাতি ব্যাংকে বন্ধক রেখে পরবর্তীকালে সেগুলো নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে চ্যানেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, ভিন্নমত দমন ও কণ্ঠরোধের অংশ হিসেবে চ্যানেলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধের আগে চ্যানেল ওয়ানের সংবাদ ও টকশোর ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সরকারের রোষানলে পড়ে টিভি পর্দা থেকে হারিয়ে যায় চ্যানেলটি।