উসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে ১৮৭৭ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণের জন্য ১৯৫৭ সালে সর্বপ্রথম স্পুটনিক ১ নামের কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছিল রাশিয়া। মহাকাশে যাওয়া প্রথম ব্যক্তিও সোভিয়েত ইউনিয়নের। তার নাম ইউরি গ্যাগারিন। তিনি ১৯৬১ সালে মহাকাশে গিয়েছিলেন।
সবশেষ ১৯৭৬ সালে চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল রাশিয়া। এটির নাম ছিল লুনা-২৪। তখন রাশিয়ার শাসনক্ষমতায় ছিলেন লিওনিদ ব্রেজনেভ। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আর চন্দ্রাভিযান চালায়নি রাশিয়া।
সেই শুন্যতা পূরণে ৪৭ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গত ১০ আগস্ট চন্দ্রাভিযানে নেমেছিলো রাশিয়া। একটি সয়ুজ ২.১ রকেটে লুনা-২৫ নামের চন্দ্রযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিলো। ১৬ আগস্ট এটি চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছায়। ২১ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ১৯ আগষ্ট দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে ব্যর্থ হয় অভিযানটি। ব্যর্থ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে দেশটির সংশ্লিষ্ট শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী ৯০ বছর বয়সী মিখাইল মারোভ-এর। অভিযানের ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর সেন্ট্রাল ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে।
ব্যর্থতায় মিখাইল কতটা আঘাত পেয়েছেন হাসপাতালের বেডেই তা জানিয়েছেন সাংবাদিকদের। যক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট-কে বলেছেন, ঘটনাটি দুশ্চিন্তার। এটা জীবনেরই একটা অংশ। ঘটনাটির মাত্রা আমার জন্য মারাত্মক ছিল। এখন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছি। এটি দুঃখজনক যে চাঁদে অবতরণ করা সম্ভব হয়নি। রুশ চন্দ্রাভিযানের পুনরুজ্জীবন দেখার শেষ আশা ছিল এই মিশন।
কেন ব্যর্থ হলো প্রশ্নের জাবাবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যানটি একটি অনিশ্চিত কক্ষপথে ঢুকেছিল। আন্তর্জাতিক মান সময় বেলা ১১টা ৫৭ মিনিটে মহাকাশযানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর আগে ১১টা ১০ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে মহাকাশযানটিকে অবতরণের আগে একটি আলাদা কক্ষপথে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন ‘অস্বাভাবিক পরিস্থিতি’ তৈরি হয়। পরে চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এটি ধ্বংস হয়ে যায়। এর কারণ খতিয়ে দেখছে বিশেষ কমিশন।
কারণ যাই হোক না কেন মর্যাদাপূর্ণ এ অভিযানে রাশিয়ার ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে মহাকাশ গবেষণায় দেশটির শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। চাপ তৈরি করবে মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো রাশিয়ার অর্থনীতির ওপরও।