রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ আইটি বিজনেস সামিট। সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি বিনিময়ে জাপানের বেসিরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যেসব সুযোগ রয়েছে তা তুলে ধরেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। নানা তথ্য উপাত্ত ও অভিজ্ঞাতার কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে আইসিটি ও সাইবার সুরক্ষা নিয়ে সমঝোতা চুক্তির পর প্রতি মাসেই কোনো না কোনো জাপানি বেসরকারি উদ্যোক্তা বাংলাদেশে এসেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ইলেকট্রনিক্স, ডিজিটাল ডিভাইস অ্যাসেম্বিলিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও সাইবার সিকিউরিটি এবং স্টার্টআপে তারা অংশীদারিত্ব চুক্তিসহ বিনিয়োগ শুরু করেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক জানিয়েছেন, দেশের প্রায় আড়াই হাজার স্টার্টআপ জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে জাপানের সফট ব্যাংক ফিনটেক প্রতিষ্ঠান বিকাশ বড় বিনিয়োগ করেছে। অল্পদিনের মধ্যে জাপানি কোম্পানি মারুবিনি হেলথটেক, এডটেক ও ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিতে বাংলাদেশের ৫টি স্টার্টআপে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশের কৃষি কাজে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহৃত এআই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় হার্ভেস্টিং বা ফল সংগ্রহ যন্ত্র দেখায় জাপানের রোবটিক কোম্পানি ইএমআই ল্যাব। প্রতিষ্ঠানটির টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার কাতুসুতে আরায়ের উপস্থিতিতে এই উপস্থাপনাগুলো তুলে ধরেন সফটওয়্যার প্রকৌশলী ওমর ফারুক ও মোহাম্মাদ রিফাত আনসারি জাইফ।
এই উপস্থাপনার প্রসঙ্গ টেনে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ এখন জ্ঞান নির্ভর সমাজে পদার্পন করছে। বাংলাদেশের ছেলেরা জাপানের সমস্যার সমাধান দিয়ে সেই সক্ষমতাও দেখিয়েছে। জাপানের শিশুরা স্বাধীনতার সময়ে নিজেদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশী শিশুদের আহারের জন্য পাঠিয়েছিলো। এভাবেই বাংলাদেশ ও জাপানে্ে মধ্যে একটি আবেগী সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এখন সময় বাংলাটেক-এর। আমাদের এখন শীর্ষে যেতে হবে। সম্মেলনের লোগোতেও সেই বিষয়টি ফুটে উঠেছে। তাই আমি বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জাপান সরকার ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের কেউ যদি বাংলাদেশে কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ইনকিবেশন সেন্টার খুলতে চায় তাবে তাদেরকে বিনামূল্যে জায়গা কিংবা প্রস্তুতকৃত স্থান দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি ও জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ইউজি আনন্দ।
এছাড়াও আগামী ২৭-২৮ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য স্টার্টআপ বাংলাদেশ সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মেলনে উপস্থিত জাপনি উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ জানান স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ।