ফটোগ্রাফি অনেকেরই শখের বিষয়। তবে এখন অনেকেই শুধু শখের বসে নয়, কাজ করছেন পেশাদার ফটোগ্রাফার হিসেবে। আর এজন্য দরকার একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা। বর্তমান বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও মূল্যহ্রাসের কারণে ডিএসএলআর ক্যামেরা সহজলভ্য। আবার বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের ও বিভিন্ন মানের ডিএসএলআর ক্যামেরা পাওয়া যায়। একজন ক্রেতা হিসেবে কিভাবে ডিয়েসেলার ক্যামেরা নির্বাচন করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন রুহুল সৈকত
১. কী কাজে ব্যবহার করবেনঃ আপনি যখন কোনও ক্যামেরার দোকানে যাবেন তখন বেশিরভাগ বিক্রেতা আপনাকে জিজ্ঞেস করবে যে আপনি কোন ধরনের ফটোগ্রাফি করবেন। সুতরাং প্রথমে নিজেকে এই প্রশ্নটি করা শ্রেয়।
২. আকারঃ ডিএসএলআর ক্যামেরা পয়েন্ট এন্ড শুট ক্যামেরা থেকে বড় হয়ে থাকে। তাছাড়া মান ও বৈচিত্রের ভিন্নতার ভিত্তিতেও এই ক্যামেরাগুলোর আকার বিভিন্ন হয়ে থাকে। কিছু কিছু ফটোগ্রাফার ভারী গিয়ার বহন করতে আপত্তি প্রকাশ করেনা কিন্তু আপনি যদি ভ্রমণ বা বুশ্ওয়াকিং এর জন্য ব্যবহার করেন তাহলে ছোট ক্যামেরাই ভালো।
৩. পূর্ববর্তী গিয়ারঃ ডিএসএলআর ক্যামেরার সুবিধা হচ্ছে এতে বিভিন্ন গিয়ার ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে লেন্সের ক্ষেত্রে তা উল্লেখযোগ্য। আপনার কাছে যদি ইতিমধ্যে একই প্রস্তুতকারকের কোনও ফিল্ম এসএলআর লেন্স থেকে থাকে তাহলে সম্ভাবনা আছে যে আপনি সেটি ডিএসএলআর ক্যামেরাতেও ব্যবহার করতে পারবেন। অবশ্য সব লেন্সের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য না। অনেক পয়েন্ট এন্ড শুট ক্যামেরার মেমোরি কার্ডও ডিএসএলআর ক্যামেরার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
৪. রেজুলেশনঃ ক্যামেরা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম মাথায় যে প্রশ্নটি আসে তা হচ্ছে এর মেগাপিক্সেল কতো। বিষয়টিকে অনেক গুরুত্বসহকারে দেখা হলেও আসলে তা নির্ভর করে আপনি তোলা ছবি কিভাবে ব্যবহার করবেন তার উপর। বড় আকারে প্রিন্ট করতে চাইলে বেশি মেগাপিক্সেল থাকা ভালো কিন্তু আপনি যদি ছবি ছোট আকারে প্রিন্ট করতে চান বা মেইলে বন্ধুদের প্রেরণ করতে চান সেক্ষেত্রে মেগাপিক্সেল খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না।
৫. আপগ্রেডঃ সাধারণভাবেই প্রশ্ন জাগে যে ভবিষ্যতে ক্যামেরা আপগ্রেড করতে পারবেন কিনা। যদিও এন্ট্রি লেভেলের ক্যামেরাগুলোর দাম কম কিন্তু উৎকৃষ্ট মানের ক্যামেরার মডেলের তুলনায় এগুলো খুব তাড়াতাড়ি সেকেলে হয়ে যায়। প্রথমে নিজেকে প্রশ্ন করেন যে ফটোগ্রাফিতে আপানার দক্ষতা কতটুকু। আপনি কি সেই ধরনের মানুষ যারা প্রথমে কোন কিছুতে প্রাথমিক দক্ষতা অর্জন করে পরবর্তীতে কার্যবিধি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে দক্ষতা অর্জনে আগ্রহ প্রকাশ করে? সেক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে একটু দাম দিয়ে ক্যামেরা কেনা শ্রেয়।
৭. অন্যান্য বৈশিষ্ট্যঃ মডেল ভেদে ডিএসএলআর ক্যামেরার ফিচার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যা হয়তো শুরুতে আপনাকে বিভ্রান্ত করবে। কিছু সাধারণ ফিচারগুলোর মধ্যে আছে এপের্চার ব্যবহার, শাটার প্রায়োরিটি, অটো বা মানুয়াল ফোকাস ইত্যাদি। তাছাড়াও যেগুলো আপানাকে বিবেচনা করতে হবে সেগুলো হোল বার্সট মোড, এলসিডি সাইজ, এন্টি-শেক, ডাস্ট প্রটেকশোন, কানেক্টিভিটি, সেমি অটো মোডস্ এবং ফ্ল্যাশ।
৮. মূল্যঃ ডিএসএলআর ক্যামেরা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সূচক এর মূল্য। বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যের ক্যামেরা থেকে শুরু করে উচ্চ মূল্যের প্রফেশনাল ক্যামেরা পাওয়া যায়। তাই সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আপনার বাজেট ঠিক করে নিন। এছাড়াও কিছু আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র যেমনঃ লেন্স, ব্যাটারি, মেমোরি কার্ড, ক্যামেরা ব্যাগ ইত্যাদি ক্রয় সংক্রান্ত খরচ আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।