দীর্ঘ বিরতিতে হলেও গোপন ব্যালটে নির্ধারিত হতে যাচ্ছে নতুন নেতৃত্ব। এটা সংগঠনকে গতিশীল করবে নিঃসন্দেহে। নেতৃত্বের সঙ্গে অস্তিত্ব সঙ্কটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে। তাই ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে এবার ভোটাররা মেধা-মননে দূরদর্শী এবং উদ্যোমী প্রার্থীকে বেছে নিতে সচেষ্ট হবেন। প্রক্রিয়াটি যেন স্থবির হয়ে না যায় সে জন্য সচেতন থাকতে হবে প্রার্থীদের।
ডিজিবাংলা-র সঙ্গে আলাপে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-কে এগিয়ে নেয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সাবেক নেতারা।
আগামী ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য আইএসপিএবি’র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে প্রত্যাশা বিষয়ে আলাপ করতে গিয়ে নতুন নেতৃত্বকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এরমধ্যে বারবারই ঘুরে ফিরি এসেছে নেতৃত্বে ভারসাম্য, নিয়মিত ভোট এবং মালিক পক্ষকে সংগঠনের নেতৃত্বে সক্রিয় থাকার বিষয়টি।
আলাপকালে আইএসপিএবি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম ইকবাল বললেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমি সংগঠনের সঙ্গে নেই। ব্যক্তিগত একটি দুর্ঘটনার কারণে ব্যবসায় থেকে দূরে আছি। তবে হৃদয়ে সংগঠনের জন্য টান অনুভব করি সবসময়। সাম্প্রতিক সময়ে আমি যতটুকু লক্ষ্য করেছি, সংগঠনটি এর সক্ষমতা অনুযায়ী গতিশীল নয়। স্লো। অন্যান্য সংগঠনগুলো যতটা সক্রিয় আইএসপিএবি ততটা নয়। প্রত্যাশা করি ব্যালটে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনটি আরো ভালোভাবে চলুক।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবায় মোবাইল অপারেটরদের কারণে এই খাতে এখন আইএসপি প্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। ইনোভেটিভ আইডিয়া ও ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব ছাড়া অস্তিত্ব সঙ্কট দিন দিন বাড়বে। এজন্য নতুন নেতৃত্ব তৈরির পথ উন্মোচন করতে হবে। আস্থা ধরে রাখতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য যারা আইএসপি ব্যবসায় গড়ে তুলেছেন তাদেরকে নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে।
২০১৩-১৫ সাল পর্যন্ত সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী সৈয়দ মুহাম্মাদ তারিকুল ইসলাম বলেন, গৎবাঁধা নিয়মে না চলে খাত সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে ব্যালটে নির্বাচিত নেতৃত্ব আইএসপিএবি-কে শক্তিশালী করবে বলে প্রত্যাশা করছি। আশাকরি, নতুন নেতৃত্ব সকলের জন্য সমানভাবে উন্নতি করবে। সাধারণ ক্যাটাগরির পাশাপাশি এবার সহযোগী ক্যাটাগরিতেও একইসঙ্গে ভোট হওয়াটা ইতিবাচক। এতে ছোট ও বড়দের মধ্যে একটা সমন্বয় তৈরি হবে।
তিনি বলেন, এবারের ভোটে নতুনরা বেশি প্রাধান্য পাবে বলে মনে হচ্ছে। ধারণা করছি, নেতৃত্বে নতুন ও পুরোনোদের সমন্বয়ে ভারসাম্য নিয়ে আসবে। অনুপাতটা ৬০:৪০ হতে পারে। যারা সংগঠনে সময় দিতে পারবেন এমন নিবেদিত মালিক পক্ষ নেতৃত্বে আসলে সংগঠনটির জন্য ভালো হবে।
প্রসঙ্গক্রমে নেতৃত্ব নির্বাচনে নিয়মিত ভোট গ্রহণ ব্যবস্থা সংগঠনকে আরো ডায়নামিক করার পাশাপাশি নেতৃত্বের দায়বদ্ধতাকে বাড়িয়ে দেয় বলে মত দেন তারিকুল ইসলাম।
ভোটে প্রত্যাশা বিষয়ে কয়েক দফায় আইএসপিএবি’র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সুমন আহমেদ সাবির বলেন, দীর্ঘদিন কোনো সংগঠনে ভোট না হলে সেখানে স্থবিরতা তৈরি হয়। সন্দেহ দানা বাঁধে। আবার নেতৃত্বে আসতে নতুন কারো আগ্রহ প্রকাশ না করাটাও সংগঠনে শূন্যতা তৈরি করে। এবারের ভোটের মাধ্যমে সেই শূন্যতা দূর হবে।
তিনি বলেন, ভোটের সংস্কৃতি নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে। তাই এই ভোটকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। প্রত্যাশা করছি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই সংগঠনকে সময়ের সঙ্গে সমান তালে গতিশীল করতে হবে। তাই এবারের নির্বাচনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাদা চোখে পরিস্থিতি যাই মনে হোক ভোট সহজ হবে না। খুবই প্রতিযোগিতামূলক হবে। অংশগ্রহণমূলক হবে। প্রত্যাশা করি, এবার এমন নেতৃত্ব আসুক যারা সংগঠনটিকে সার্থকভাবে এগিয়ে নেবে।