আইসিটি খাতে আরো তিন বছর কর অবকাশ দাবি
সরকার নানা উদ্যোগ নেয়ার পর ভারত, এস্তোনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনস থেকে আইসিটি খাতে জিডিপিতে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এই খাতের ৯৯ শতাংশ প্রথম প্রজন্মের উদ্যোক্তাই। আর তারা যেহেতু ব্যাংক ঋণ পান না এবং এখন যদি নীতিগত সুবিধার কর অবকাশ সুবিধা বঞ্চিত হয় তাহলে দেশ এই খাতে সার্বভৌমত্ব হারাবে। বিদেশী কোম্পানির পকেটে চলে যাবে এই বাজার। এমন পরিস্থিতে আগামীতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ কমে যাবে এবং শিল্প রফতানি কমে যাবে, মেধাবীরা চলে যাবে বিদেশে। একইসঙ্গে বাড়বে বেকারত্ব। এমন পরিস্থিতে আগামী তিন বছরের জন্য বিনিয়োগ বান্ধব নীতিগত ও কর অবকাশ সুবিধা রাখা, শিল্প-শিক্ষা সমন্বয়, সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বে এ ই-আডেন্টিটি এবং ভারতের ডিজিটাল রূপান্তরের জিও মোমেন্ট নীতি অনুসরণের প্রস্তাব দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার দুপুরে বনানীর ঢাকা শেরাটন হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ গোল টেবিল বৈঠকে এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ভিসিপিয়াব প্রেসিডেন্ট শামীম আহসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক; ডাক, টেলিযোগাযাগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ, সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ এবং জারা মাহবুব।
মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচক ছিলেন বিডি জবস প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর, পলিসি এক্সেঞ্জ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, ব্রেইন স্টেশন ২৩ সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাইসুল কবির, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাঞ্জেল ইনেভেস্টর তানভীর আলী, বিশ্ববিদ্যলয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসাইন, সিআরআই পলিসি অ্যাডভাইজার ইমরান আহমেদ, স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম, পিআরআই সিনিয়র ফেলো ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফোরকান বিন কাশেম, এডিএন টেকনোলজিস চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মোঃ আশরাফ আহমেদ, চট্টগ্রাম চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি চেয়ারম্যান ওমর হাজ্জাজ, এফবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালী প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা মনে করেন, রাজস্ব বোর্ডের ভুল উপাত্তের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আইসিটি খাতকে অতিমূল্যায়নের মাধ্যমে কর অবকাশ সুবিধা উঠিয়ে নেয়ার প্রেসক্রিপশান দেয়া হচ্ছে। তাদের মতে, যখন বিশ্বে এআই বিশ্ব গিলে খাচ্ছে তখন এমন উদ্যোগ উড়ন্ত এই খাতকে মুখ থুবড়ে পড়বে। এই খাতকে জিডিপি নয় ক্রসকাটিং সেক্টর হিসেবে বহুমুখী কল্যাণের খাত হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজ্যুয়েট তৈরির চেয়ে দক্ষ কর্মী গড়ে তুলে নলেজবেজড ইকোনোমির দিকে নজর দেয়া। এছাড়াও ল্যাপটপের উপর বাড়তি কর বসানোর কারনে অবৈধ ল্যাপটপ বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই খাত যেহেতু উদ্ভাবনার এবং পুণঃ বিনিয়োগের তাই ব্যবসায়ীদের এই ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সুযোগ দেয়া দরকার। ট্যাক্স গ্র্যান্ট দিলে ব্যবসায়ীদের ওপর কর দেয়াটা সহজ হয়ে যাবে।