দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশি অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির যৌথ টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট মিশন (টিএএম) এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন গত ১৬ মার্চ আইআরআই-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ৮ থেকে ১১ অক্টোবর সময়কালে আইআরআই এবং এনডিআই একটি প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন সম্পন্ন করে। ওই দলের সদস্য ছিলেন আইআরআই কো-চেয়ার এবং প্রাক্তন ডেপুটি ইউএসএআইডি প্রশাসক বনি গ্লিক, এনডিআই কো-চেয়ার এবং দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সাবেক সহকারী মন্ত্রী কার্ল এফ. ইন্ডারফারথ, মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য মারিয়া চিন আবদুল্লাহ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির সাবেক সহযোগী কাউন্সেল জামিল জাফর, আইআরআই-এর এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর জোহানা কাও, এবং এনডিআই এশিয়া-প্যাসিফিকের আঞ্চলিক পরিচালক মনপ্রীত সিং আনন্দ।
নির্বাচনের সময় অনলাইনে আপত্তিকর কথা এবং পোস্ট বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর, গুজব ও বিভ্রান্তিকর রাজনৈতিক আক্রমণ চালানো হয়েছে, যার সিংহভাগের জন্য দায়ী ছিল বিএনপি। উভয় পক্ষই নির্বাাচনের সময় বাংংলাাদেশের শ্লেষাাত্মক
সোশ্যাাল মিডিয়া পরিবেশে অবদাান রেখেছিল।
এনডিআই-আইআরআই-এর প্রতিবেদন বলছে, প্রান্তিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে নারীরাও নির্বাচনী সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো ফেসবুক আইডি অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটওয়ার্কিং সাইট নেই। ‘প্রধানমন্ত্রীর নামে খোলা প্রতিটি আইডি ভুয়া’ বলে এর আগে এক পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন সহকারি প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস।
সাামাাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়গুলো নিরীক্ষা এবং ফেসবুক এ নির্দিষ্ট সংবেদনশীল শব্দ খুঁজে বের করতে টিএএম স্যোশ্যাাল মিডিয়া মনিটরিং পদ্ধতি CrowdTangle এবং Newswhip ব্যবহাার করেছে।
প্রতিবেদনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন, যা ভোটারদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা প্রদান করে এবং অনলাইন জগৎসহ নাগরিক স্বাধীনতা এবং মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করে, এসব বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ উন্নত করতে পরামর্শ দিয়েছে টিএএম।
ফলাফল ও অগ্রাধিকার সুপারিশের সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইনের কথোপকথনকারীরা প্রায়ই ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং এর প্রতিস্থপিত ২০২৩ সালের পাস করা সাইবার নিরাপত্তা আইনকে উদ্ধৃত করে সরকাারের সংস্কাারের আশ্বাাস সত্ত্বেও স্ব-সেন্সরশিপ এর দিকে ধাাবিত হচ্ছে। সাংবাদিকরা নির্বাাচনীী প্রচাারণাা ও বিক্ষোভের সময় ক্ষমতাাসীন দল ও বিরোধীদের থেকে নির্বাাচনী সহিংসতাার সম্মুখীন হয়েছে। মিডিয়া স্ব-সেন্সরশিপ করেছে।