সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলির ভুয়া খবর ও প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠছে ফেসবুক। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো নিজ স্বার্থে এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে ভুয়া খবর প্রচার করছেন। এই তথ্য দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা বলেছেন, বিশ্বের ৭০টির মতো দেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো ফেসবুকের অপব্যবহার করছে। দুই বছর আগের তুলনায় ফেসবুক অপব্যবহারের হার এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এহেন অবস্থায় বিরোধী মতামত, বা উদার আন্তর্জাতিক আদেশ বিশ্বাস বিনষ্ট হচ্ছে।
‘দ্য গ্লোবাল ডিসইনফরমেশন অর্ডার ২০১৯: গ্লোবাল ইনভেনটরি অব অরগানাইজড সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানিপুলেশন’ শীর্ষক গবেষণা নিবন্ধে এই বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।
টানা তিন বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের দুজন গবেষক রাজনৈতিক দলগুলোর ফেসবুকে আগ্রহ দেখানোর দুটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। একটি হচ্ছে এর বৈশ্বিক পর্যায়ে পৌঁছানোর ক্ষমতা আর অন্যটি হচ্ছে ফেসবুকে ভুয়া খবর ঠেকানোর ব্যর্থতা।
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ভুয়া খবর ছড়ানোর হার ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার পদ্ধতি বের পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুকের ব্যাপক বিস্তার ও এর পরিচালনা পদ্ধতি এই প্লাটফর্মটিকে ভুয়া খবর ঠেকানোর হারকে আরও দুর্বল করে রেখেছে। এর ফলে ফেসবুক জনগণের মতামতকে বদলে দিতে যাচ্ছে।
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ভুয়া খবর ছড়ানোর হার ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার পদ্ধতি বের করতে এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষকেরা বলেন, ফেসবুকের ব্যাপক আকার ও এর পরিচালনাপদ্ধতি ফেসবুকে ভুয়া খবর ঠেকানোর হারকে আরও দুর্বল করে রেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে প্রতিপক্ষের নামে বাজে কথা ছড়ায় রাজনৈতিক দলগুলো। বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়। যে ৭০টি দেশের তালিকা এসেছে তার মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিবেশী হিসেবে ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের নাম এসেছে। তবে ওই তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। ওই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ইরান, চীন, তুরস্ক, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, ব্রাজিল, স্পেনের মতো দেশ রয়েছে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে ৪৮টি দেশ ফেসবুকে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর কাজ করত। ২০১৭ সালে মাত্র ২৮টি দেশ থেকে ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগ ছিল। এসব দেশের অন্তত একটি রাজনৈতিক দল বা সরকারি সংস্থা সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহার করে জনগণের ব্যবহারের ওপর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করে।