আনুষ্ঠানিক ভাবে রাষ্ট্রীয় অপারেটর ছাড়া এখনো কেউই চালু করেনি ৫জি সেবা। কিন্তু ভেতরে ভেতরে এই সেবা দেয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে অপারেটরগুলো। আইওটি সেবায় ৫টি ব্যান্ডকে ৫জি সমর্থিত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। সর্বশেষ তরঙ্গ নিলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে সর্বোচ্চ তরঙ্গ ক্রয় করেছে মোবাইল অপারেটররা। এই তরঙ্গ ব্যবহারের প্রস্তুতিতেও পিছিয়ে নেই আইওটি সেবাদাতার। চলতি বছর পর্যন্ত বাংলাদেশে বসেই অন্তত ১৯টি প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে আইওটি পণ্য ও সেবা। ধারণা করা হচ্ছে, জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিতে ৬ শতাংশ অবদান রাখবে এই ক্ষিপ্র গতির ইন্টারনেট। আর এই গতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে প্রয়োজন ফাইভজি’র জ্ঞান। সেই জ্ঞান সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে মঙ্গলবার (২৮ জুন ২০২২) সদস্যদের নিয়ে কর্মশালা করলো বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।
এই কর্মশালায় এভাবেই ৫জি’র প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) এর প্রকৌশল অনুষদের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল (ইইই) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম) ও সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন।
বাংলাদেশে ফাইভজি প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও সুযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়; বিশেষ করে ল্যাটেন্সি এবং জনবহুল অঞ্চলেও স্মার্ট প্রযুক্তিতে ব্যক্তির সঙ্গে মেশিন এবং মেশিনের সঙ্গে ব্যক্তির সখ্যতা গড়ে তোলার পাশাপাশি বাণিজ্যিক পর্যায়ে এর নান্দনিক প্রয়োগের বিসয়টি তুলে ধরেন তিনি।
৫জি ডিভাইসে এগিয়ে থাকা অপো এর সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত “ফাইভজি ইন বাংলাদেশ: প্রসপেক্টস, অপরচ্যুনিটিস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড“ শীর্ষক এই কর্মশালায় সতস্ফূর্তভাবে অংশ নেন বিআইজেএফ’র সদস্যরা।
কর্মশালাতে ফাইভজি’র বিকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় এবং কীভাবে মানুষ পঞ্চম প্রজন্মের কানেক্টিভিটি প্রযুক্তির সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন তার ওপর আলোকপাত করা হয়।
কর্মশালায় বিআইজেএফ’র সভাপতি ও ইত্তেফাকের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউ ও সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক সমকালের সিনিয়র সহ-সম্পাদক হাসান জাকির সহ সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যগণ অংশ নেন। কর্মশালায় অপো বাংলাদেশ অথোরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’র হেড অব ব্র্যান্ড লিউ ফেং, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের ম্যানেজার মো. আশিকুর রহমান এবং প্রোডাক্ট ম্যানেজার কাজী আশিক আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।
ফাইভজি নিয়ে তার বক্তব্যের পর অপো’র পক্ষ থেকে মো. আশিকুর রহমান ও কাজী আশিক আরাফাত ফাইভজি এবং এ প্রযুক্তি নিয়ে অপো’র নেতৃস্থানীয় কর্মকাণ্ড ও উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন। অপো’র ফাইভজি-সক্ষম ও সমর্থিত ডিভাইসগুলোর পাশাপাশি তারা অপো’র সম্প্রতি উন্মোচিত হওয়া এফ২১ প্রো ফাইভজি ডিভাইসের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন। এফ২১ প্রো ফাইভজি ডিভাইসটি বাংলাদেশে ব্র্যান্ডটির প্রথম ফাইভজি সমর্থিত ডিভাইস।
কর্মশালায় বাংলাদেশ অথোরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’র হেড অব ব্র্যান্ড লিউ ফেং বলেন, “ফাইভজি প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত হবে; যা মানুষের জীবনযাত্রার মানকেও আরো উন্নত করবে। তাই ফাইভজি সম্পর্কে আমাদের বেশ কিছু বিষয় জানা বেশ জরুরি। এগুলো হলো: এটি কীভাবে কাজ করে, এর গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট খাতের ওপর এর প্রভাব এবং এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ফাইভজি প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবে।” এমন একটি সুন্দর কর্মশালা আয়োজনের জন্য অপো কে সহযোগিতা করায় বিআইজেএফ’র প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কর্মশালায় বিআইজেএফ’র সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম বলেন, “দেশের অর্থনীতি ও জনসাধারণের জীবনমানের ওপর ফাইভজি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আগামীতে এই প্রযুক্তি আরও বিস্তারলাভ করবে। আমরা বিআইজেএফ’র পক্ষ থেকে এরকম একটি কর্মশালা আয়োজন করার জন্য অপো কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই কর্মশালা থেকে পাওয়া তথ্য আমাদের ফাইভজি সম্পর্কিত জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ করেছে। ভবিষ্যতে তথ্যবহুল রিপোর্টিং করতে এই তথ্য আমাদের কাজে লাগবে।”
বিআইজেএফ’র সাধারণ সম্পাদক হাসান জাকির বলেন, “ধারাবাহিক উন্নতির জন্য নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক থাকা জরুরী। বাংলাদেশে ফাইভজি’র ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে এবং সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের এই বিষয়ে জ্ঞান থাকা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ লক্ষ্য অর্জন করতে অপো’র এই ধরনের উদ্যোগকে বিআইজেএফ স্বাগত জানায়। আশা করছি আগামীতে একসাথে এই ধরনের আরও উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হবে।”
কর্মশালায় প্রায় ৪০ জন বিআইজেএফ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। ভবিষ্যতে যৌথ উদ্যোগে এ ধরনের আরও কর্মশালা আয়োজিত হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।