আগামী ৯ মার্চ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। ৯ জানুয়ারি থেকে এক মাসব্যাপী ভোট কার্যক্রমও শুরু হয় যথারীতি। ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী পরবর্তী অভিভাবক নির্বাচনে ভোটার হয়েছেন দুই হাজার ১৫০ জন।
তবে তারা শেষ পর্যন্ত ব্যালটে টিক দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কেননা, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সাত জন বৈধ মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন বোর্ড। অবশ্য এই তালিকায় আপত্তি জানিয়ে পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডে আবেদন করেছেন টেকহিলের সত্বাধিকারী ও এলিফেন্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন এবং এশিয়া কমের সত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ আবদুল জলিল।
তাদের আরজি নির্ধারিত সময়ের ৫মিনিট বিলম্বে জমা পড়ার বিষয়টি মওকুফ করে তাদের আবেদন যেন বৈধ হিসেবে বিবেচনায় নেয় নির্বাচন বোর্ড। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে শুনানি নিষ্পত্তি করবেন বিসিএস এর প্রাক্তন সভাপতি এস.এম. ইকবাল এর নেতৃত্বে নির্বাচন আপিল বোর্ড সদস্য মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান কার্যনির্বাহী ও এফবিসিসিআই এর প্রাক্তন পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির ও এডভান্সড কম্পিউটার টেকনোলজি’র(এসিটি) স্বত্বাধিকারী প্রকৌশলী চৌধুরী মো. আসলাম।
আর আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে বিসিএস নির্বাচন বোর্ড। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন ওরা-টেক কনসালটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ কবীর আহমেদ। আর সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাইবার কমিউনিকেশনের প্রধান কার্যনির্বাহী মো. নাজমুল আলম ভুঁইয়া (জুয়েল) এবং কম্পিউটার আর্কাইভস এর স্বত্বাধিকারী মো. আমির হোসেন। বোর্ড সাক্ষরিত সাত জন বৈধ মনোনয়নপত্র জমাদানকারী হিসেবে এরইমধ্যে সি এন্ড সি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান ও বর্তমান সভাপতি প্রকেশৗলী সুব্রত সরকার, স্টার টেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই পরিচালক মো: রাশেদ আলী ভূঁইয়া, সাউথ বাংলা কমপিউটারের সত্ত্বাধিকারি ও বিসিএস মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, মিজান ট্রেডের সত্ত্বাধিকারী আনিসুর রহমান, নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী এইচ এম শাহ নেওয়াজ, মাইক্রো সান সিস্টেমের সত্ত্বাধিকারী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান এবং টেকনো প্ল্যানেট সিস্টেমের মো: মনজুরুল হাসান বৈধ ঘোষণা করেছেন।
তাই আপিল বোর্ড প্রর্থী আবেদন গ্রহণ করলেও নতুন দুই প্রার্থীর কারণে আদতে নির্বাচনে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ভোটারদের পছন্দ করে নেয়ার সুযোগ সীমিতই থাকছে বলে মনে করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। কেননা বৈধ সাত সদস্যের আবেদনই জমা দিয়েছেন একজন ব্যক্তিই। এতে এই সাতজন একটি প্যানেলভুক্ত বলেই ধরে নেয়া যায়। আর আবেদন যদি খারিজ করে দিয় তাহলে সাত পরিচালকই ব্যালট খরচ ছাড়াই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পরবর্তী কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে রায় পেয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত বিসিএস ২০২০-২২ মেয়াদকালের কার্যনির্বাহী কমিটি ও শাখা কমিটির নির্বাচনে সিঅ্যান্ডসি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকারের নেতৃত্বে ‘চ্যালেঞ্জার্স ২০২১’ এবং ইপসিলন সিস্টেমস অ্যান্ড সলিউশনের চেয়ারম্যান শাহিদ-উল-মুনীরের নেতৃত্বে ‘সমমনা ৭’ প্যানেলের ১৪ প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল কম্পিউটার ভিশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ টি শফিক উদ্দিন আহমেদ, মাইক্রোসান সিস্টেমসের স্বত্বাধিকারী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান এবং টেকনো প্ল্যানেট সিস্টেমসের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুরুল হাসান। সেই হিসেবে বৈধ সাত প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন নতুন। একজন সাবেক। এবং বাকি তিনজন বর্তমান কমিটিতেই রয়েছেন।