গুগল করে অনলাইনে পরীক্ষার উত্তর দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ওপর জরিপের ভিত্তিতে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। শিগগিরি এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানিয়েছেন, গত ১৭ মার্চ থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হওয়ার পর অনলাইনে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার পর এই কার্যক্রম কেমন চলছে তা নিয়ে গত দুই মাস ধরে একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম মাঠ পর্যায়ে জরিপ করেছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, স্মার্টফোন ল্যাপটপ ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষার সময় গুগোল সহজেই শিক্ষার্থীদের চাহিদা মাফিক নকল সরবরাহ করেছে।
ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে বস্তিতে বসবাসকারী পরিবারের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মতামত নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান মহিউদ্দিন আহমেদ।
জরিপে ১০০ মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের পরিবারের ৫টি পরিবারে ব্রডব্যান্ড ওয়াইফাই সংযোগ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি। বাকি ৯৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টি পরিবারের কাছে থ্রিজি এবং ২০টি পরিবারে ৪জি ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ব্যবহারকারী ৪০টি পরিবারের মধ্যে ১৫টি পরিবারের হাতে অ্যান্ড্রয়েড হ্যান্ডসেট ইন্টারনেটের উচ্চমূল্যের কারণে ব্যবহার করছে না। বাকি ২৫টি পরিবার টুজি ব্যবহার করার হ্যান্ডসেট রয়েছে।
সংগঠনটির পর্যবেক্ষণ বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযুক্তির বৈষম্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ৪০% দরিদ্র পরিবারের উচ্চমূল্যের ডাটা ও ডিভাইস চিনতে না পারার কারণে তার সন্তানকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করাতে পারছে না। ফোনে শিক্ষা কার্যক্রমে একটি ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। এতে করে শিক্ষা চলে যাচ্ছে উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের হাতে। আগামী দিনে এই পরিস্থিতি বিরাজ করলে দেশের ৮০% শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়বে। তাছাড়া শিক্ষক ও অভিভাবকরা যদি প্রযুক্তি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ও সচেতন না হয় তাহলে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা কোন কাজে আসবে না বরঞ্চ আগামী দিনে আরো একটি মেধাহীন অলস একটি জাতি পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অপরদিকে উচ্চ মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সকলের কাছে স্মার্টফোন রয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ওয়াইফাই ব্যবহার করছে ৬৫টি পরিবার। এ সকল পরিবারের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পাশাপাশি বিনোদন খেলা নিয়ে বেশি সময় ব্যয় করছে।
অবশ্য এখন শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পরীক্ষায় ভালো করছে। এ বিষয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ওপর জরিপ করে মুফোফোন গ্রাহক এসেসিয়েশন। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গুগল করে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আবার এক্ষত্রে গ্রুপ চ্যাট করেও কেউ কেউ উত্তর লিখছে।
সংগঠনটি বলছে, আগের মতো এখন আর ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় মনোযোগী হচ্ছে না। অথচ অনলাইন পরীক্ষা প্রত্যেকেই ফলাফল ভালো করছে। শিক্ষকদের মন্তব্য, ঘরে বসে থেকে বেশি বেশি পড়ালেখা করার কারণে হয়তো তারা ফলাফল ভালো করছে কিন্তু গুগোল শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সহায়তা করতে পারে এ সম্পর্কে শিক্ষকরাও সচেতন নন।
এ জন্য অনলাইন পরীক্ষা ব্যবস্থায় নতুন ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চেয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।