আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দরকে আলিঙ্গনের মাধ্যমে বুধবার থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হলো চার দিনের তথ্যপ্রযুক্তির অলেম্পিক ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন সম্মেলন। একইসঙ্গে উদ্বোধন করা হলো ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০২১’।
বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে বিশ্বের ৮৫টি দেশের অংশগ্রহণে হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত ডব্লিউসিআইটির রজত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ।
বঙ্গভবনের গ্যালারী হল থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্যে করোনা মহামারির দুঃসময়ে প্রযুক্তি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার প্রমাণ আমরা পাই করোনা মহামারির দুঃসময়ে। মহামারি মোকাবিলায় সবচেয়ে নির্ভরশীল মাধ্যম হয়ে ওঠে তথ্যপ্রযুক্তি। দেশের শিক্ষা কার্যক্রম, বিচারিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিংসেবা হয়ে পড়ে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। কোভিড-১৯ মহামারিকালে তথ্যপ্রযুক্তির স্থানীয় বাজার অকল্পনীয় প্রসার লাভ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা হয়। আইসিটি বিভাগ কোনো রকম অর্থ ব্যয় ছাড়াই ‘সুরক্ষা’ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে করোনার টিকা কার্যক্রমকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনায় সহযোগিতা করছে। এ প্লাটফর্মে নিবন্ধনের সংখ্যা এরই মধ্যে ৭ কোটি ছাড়িয়েছে।
এসময় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিতে সকলকে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, পেশাজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেও এগিয়ে আসতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অগ্রগামী প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।
এক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিদদের সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি একদিকে যেমন আমাদের জন্য অবারিত সুযোগের দ্বার উন্মোচিত করেছে, তেমনি এর অপব্যবহার ও জালিয়াতির কারণে অনেক চ্যালেঞ্জেরও জন্ম দিয়েছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তির এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে থাকতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলনের প্রধান আয়োজক উইটসা প্রতিনিধি সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ শাহিদ উল মুনীর। আরো বক্তব্য রাখেন উইটসার চেয়ারম্যান ইয়ানিস সিরোস, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ডাক্তার মো. আব্দুল মান্নান ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার হাতিয়ার হিসেবে প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি সকলের প্রতি আহ্বান জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেছেন, আইসিটিকে আমরা ব্যবহার করি গ্রাম-শহরে দূরত্ব দূর করা , ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা, নারী-পুরুষের বিভেদ দূর করার জন্য। আর সেই প্রতিবাদ্যে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে। তাই আমরা প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো অনুসরণ করি, খারাপ দিকগুলোকে পরিহার করি। তিনি আরও বলেন আমরা ডিজিটাল সার্ভিস অ্যাক্ট প্রণনয়সহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি। যাতে সরকারের ডিজিটাল সেবাগুলো দ্রুততা এবং স্বচ্ছতার সাথে জনগণের হাতের মুঠোই পৌছে দিতে পারি।
সূচনার মতো জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে ও লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে শেষ হয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তবে সকাল থেকেই হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হতে থাকে বিভিন্ন বিষয়ক সেমিনার।