রোহিঙ্গাদের মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির দেয়া নির্দেশনা অকার্যকর বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তোপখানায় অবস্থিত নির্মল সেন মিলনায়তনে “রোহিঙ্গাদের টেলিযোগাযোগ/ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কিত সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ উত্তর সংবাদ সম্মেলন” এ এই দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করবেন সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের মহাসচিব অ্যাড. আবু বক্কর সিদ্দিক, সবুজ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, এনপিপি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ডাঃ আলতাব, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ বাহারানে সুলতান বাহার, জাতীয় উন্নয়ন পার্টির সভাপতি মাহাবুব খোকন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য কাজী আমানুল্লাহ মাহফুজ, শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গাদের টেলিযোগাযোগ/ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কিত বিটিআরসির নির্দেশনা কার্যকর হয়নি বলেই আমরা প্রত্যক্ষ করছি। গত ৩১ আগষ্ট গণমাধ্যমে ‘অবৈধ ভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যবহার করে সংগঠিত হচ্ছে রোহিঙ্গা’ শিরোনামে একটি বিবৃতি পাঠাই। বিষয়টি জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনা করে বিভিন্ন গণমাধ্যম বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি সরকার আমলে নিয়ে বিটিআরসিকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ প্রদান করেন। বিটিআরসি অপারেটরদের কে একটি নির্দেশনা প্রদান করে যাতে বলা হয়, আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোন প্রকার সিম বিক্রি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সিম ব্যবহার বন্ধ তথা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মোবাইল সুবিধাদি প্রদান না করা সংক্রান্ত সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করে বিটিআরসিকে অবগত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পরের দিন আরেক নির্দেশনায় বলা হয় সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরের দিন ভোর ৫ টা পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ৩জি ও ৪জি সেবা বন্ধ থাকবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ থাকবে।
তিনি আরো বলেন, একটি অবৈধ সেবা গ্রহণ করে অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশকারী নাগরিকগণ সংগঠিত হচ্ছে, অপরাধ করছে এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে। এমতাবস্থায় তাদেরকে ৭ দিন দূরে থাক এক ঘন্টার জন্য বিটিআরসি টেলিযোগযোগ ও ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে কি না বা তাদের সেই ক্ষমতা আছে কি না তা আমাদের প্রশ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন সভাপতি বলেন, ২০১৬ সালে ৩০ এপ্রিল বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বৈধ নাগরিকদের সিম নিবন্ধনের সময় শেষ হবার পর রাত ১২ টার পর নিবন্ধন করতে ব্যর্থ সকল সিম বন্ধ করা হয়েছিল। গত দুই মাস পূর্বেও ১৫ অধিক ২৩ লক্ষ সিম বন্ধ করা হল। অথচ অবৈধ নাগরিকদের বেলায় কেন ৭ কার্যদিবসেও কেন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেল না।
কেন এমনটা হচ্ছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
সংগঠনের পক্ষে জানানো হয়েছে, আদেশ প্রতিপালন বিষয়ে তদন্তে অ্যাসোসিয়েশেন প্রতিনিধি মোঃ নিজামের নেতৃত্বে একটি দল ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে ১২টি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। গত ৩ দিন যাবত তারা ক্যাম্প পরিদর্শন কালে লক্ষ্য করেছেন রোহিঙ্গারা অবাধে দিন রাত ২৪ ঘন্টা টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। যদিও নির্দেশনার প্রথম দিন ইন্টারনেটের গতি অনেক জায়গায় কম ছিল। তবে ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বিটিআরসি’র কোন কর্মকর্তাকেও দেখা যায়নি। রিটেইলারদের ব্যবসায় কোন মন্দা আসেনি।
এ প্রসঙ্গে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অর্থাৎ বিটিআরসির নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি, এতে কোন সন্দেহ নাই। এতে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।