রবিবার রাতে কাকরাইলস্থ আইডিইবি ভবনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর ৮০তম জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠান। অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি’র উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এসময় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এই উপলক্ষ্যে ভিডিও কলে আবদুল হামিদ কে মন্ত্রী তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। তিনি তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। এর জবাবে রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক- শ্রোতাসহ সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান এবং নতুন বছর সকলের সুন্দরভাবে কাটুক এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, রাষ্ট্রপতি জনাব মো: আবদুল হামিদ চিরকাল বিজয়ী বীর। তিনি অনুকরণীয় একটি আদর্শ। উত্তরে গারো পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ভৈরব পর্যন্ত ২৫০০ বর্গ কিলোমিটারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের হাওরবাসীসহ সারা বাংলাদেশের গর্বের মানুষ তিনি। মানুষকে ভালবাসলে মানুষ ভালবাসা ফিরিয়ে দিতে কখনো ভুল করে না রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ তার জীবন্ত দৃষ্টান্ত।
অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি,বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান, সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. আনোয়ার হোসেন, আব্দুল হক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হক, ডিএমপি‘র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ, (পিপিএম বার,বিপিএম বার), অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন মীর, অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বিমল চন্দ্র রায়, অভ্যর্থনা কমিটির আহবায়ক, আবেদা আক্তার জাহান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি মো. সোলায়মান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ বিল্লাল হোসেন ও কামরুল হাসান বাবু।
মন্ত্রী কিশোরগঞ্জের সন্তান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান এবং মো: আবদুল হামিদ কে সকলের গর্বের ধন উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রাজনীতির আকাশের উজ্জ্বল এক তারা। তার মতো একজন মানুষের জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ায় নিজেকে আমি খুবই ভাগ্যবান মনে করছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার স্বাধীনতার আন্দোলন, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন তিনি আদর্শিক রাজনীতির কিংবদন্তী। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে জেল জুলুম এবং মন্ত্রীত্বের লোভ কোন কিছুতেই তাকে তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত ঘটাতে পারেনি। তিনি হাওরবাসি মানুষের অহংকার। মন্ত্রী হাওরের বর্তমান ও অতীতের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, হাওরবাসি আজ শিক্ষা, যোগাযোগ এবং ডিজিটাল সংযুক্তিসহ উন্নয়নের প্রতিটি স্তরে পিছিয়ে নেই। অথচ এই হাওরে একদিন ক্লাস সিক্সে পড়তে পারিনি, স্কুল ছিল না। বাড়ি থেকে ২৫ কিলিমিটার দূরে হোস্টেলে থেকে পড়তে হয়েছে। আজ হাওরের সেইদিন পাল্টে গেছে। হাওরে বসেই হাওরের ছেলে মেয়েরা আজ গ্রাজুয়েশন করতে পারছে। আমরা হাওরে ডিজিটাল সংযুক্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। কোভিডকালে ঘরে বসে শিক্ষার্থীরা ক্লাশ করতে পেরেছে যা এক সময় কল্পনাও করা যেত না।
হাওরের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এক সময় হাওর থেকে ঢাকা আসতে তিন দিন সময় লাগতো। আজ সে দিন পাল্টে গেছে। তিন ঘন্টায় এখন হাওর পাড়ি দিয়ে ঢাকায় আসা সম্ভব। এসব কিছুই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্ব ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগের ফসল বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষের সার্বিক জীবনমান আজ পাল্টেগেছে। মন্ত্রী জন্মদিন পালনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।
সংসদ সদস্য রেজোয়ান আহম্মাদ তৌফিক আবদুল হামিদ-এর জন্ম দিন পালনে অষ্টগ্রাম ইটনা মিঠামইন উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, আপনাদের ভালবাসাতে আমরা সিক্ত। বারবার আমার বাবাকে আপনারা নির্বাচিত করে তাকে সম্মানিত করেছেন। আপনাদের ভালবাসার কারণেই তিনি আজকের জায়গায় উপনীত হয়েছেন। তিনি পরিবারের পক্ষ থেকেও উদ্যোক্তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জনাব আবদুল হামিদ-এর রাজনৈতিক, পারিবাারিক ও ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।
পরে আবদুল হামিদ-এর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এবং কেক কেটে জন্ম দিন পালন করা হয়।
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।