সেবার ডিজিটাল রূপান্তরে দুর্নীতি ও ভোগান্তি কমিয়ে এটুআই উদ্ভাবিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রধানমন্ত্রীর এই ‘ডিজিটাল সন্তানে’রাই মেধা ভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
এটুআই এর যুগপূর্তী সংবাদ সম্মেলনে এমন আশার কথা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শহর-গ্রাম, ধনী-দরিদ্র ও নারী-পুরুষের বৈষম্য ঘুচে টেকসই উদ্ভাবনী সেবা দোরগোড়া থেকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশে থেকে স্মার্ট ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এটুআই। এজন্য স্বল্পমেয়াদী বা এক দিনের প্রশিক্ষণের পরিবর্তে। ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে স্মার্ট উদ্যোক্তা তৈরিতে সংস্থাটিকে ছয় মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়া দরকার।
এসময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে নারী উদ্যোক্তাদের ৫ মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে সিড মানি দেয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
ডিজিটাল সেবাদাতা ও গ্রহীতা,ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যম কর্মী এবং আইসিটি খাতের নেতাসহ অংশীজনদের নিয়ে শুক্রবার আইসিটি টাওয়ারে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন ইনফরমেশন ডিজিটাল সেন্টারের এক যুগপূর্তীর সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ইউডিসি ইনলাইন থেকে অনলাইনে, গ্রাম থেকে শহরে এবং দেশ থেকে বিদেশে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দিচ্ছে এটুআই। আমাদের লক্ষ্য ৮৭ হাজার গ্রামে একটি করে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা। কৃষি ও প্রযুক্তিকে একত্রিত করেছি।
‘হয়তো একদিন আমাদের চাঁদে বসতি গড়ে উঠবে। দেশে তৈরি স্যাটেলাইট চাঁদে যাবে। সেখানে যাবে আমাদের নভোচারী’- যোগ করেন পলক।
নিউইউর্ক থেকে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়ে এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনির চৌধুরী জানান, যুগপূর্তীতে গ্রাম এবং প্রবাসী ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, সকল উপজেলা ও বিদেশের মাটিতেও কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে ১৭০টি জাতিসংঘ সদস্য দেশের ৫০টি দেশে রপ্তানি হবে বাংলাদেশের ডিজিটাল সেন্টার ধারণা। পাশাপাশি দেশের ৭৯ লাখ ক্ষুদ্র ও কুটির উদ্যোক্তাকে ডিবিএন এর আওতায় আনা হবে।
ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস স্পেন) হেড অফ ডিজিটাল সেন্টার তহুরুল হাসানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শের আলী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার শুভ খান, দৈনিক সমকাল আইসিটি পেজ ইনচার্জ হাসান জাকির, এনটিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি মুকলিমূল আহসান অপু, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি সুব্রত সরকার এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার ইউডিসি’র অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তৃণমূলে নারী উদ্যোক্তারা নানা কারণে ঝরে পড়ে জানিয়ে অনুষ্ঠানে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, “নারী উদ্যোক্তাদের দীর্ঘ মেয়াদে ধরে রাখতে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে অভ্যাগত অতিথিকে নিয়ে যুগপূর্তি কেক কাটেন এটুআই প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মুহাম্মাদ হুমায়ুন কবীর। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং প্রবাসে বর্তমানে ৮ হাজার ৮০৫টি ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে তিনি জানান; প্রবাসে ডিজিটাল সেন্টারের সংখ্যা ১৫টি। হুমায়ুন কবির বলেন, “এসব সেন্টারের ১৬ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা রয়েছেন। প্রতিমাসে গড়ে ৭০ লাখেরও অধিক সেবা দিচ্ছে। সেবার তালিকায় সব মিলিযে তিন শতাধিক সরকারি-বেসরকারি সেবা রয়েছে।”
ইউএনডিপি’র সহায়তায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘এটুআই’ কর্মসূচি। এটু্আইকে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় রূপ দিতে ইতোমধ্যে আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে সরকার।