জ্ঞান বিনিময় এবং রোগ নির্ণয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনা দিতে রাজধানীতে শুরু হয়েছে চিকিৎসকের দুই দিনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স। প্যাথলজি চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ একাডেমি অফ প্যাথলজির উদ্যোগে গতকাল শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘১ম আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ও ৭ম জাতীয় সম্মেলন’ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহ মুনির হোসেন, সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন. সঠিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য সঠিক রোগ নির্ণয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন প্যাথলজিস্টরা। পরীক্ষা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যান্সারসহ নানবিধ জটিল রোগের চিকিৎসা অনেকাংশেই নির্ভর করে একজন দক্ষ প্যাথলজিস্টের সঠিক রোগ নির্ণয়ের উপর। বাংলাদেশে প্যাথলজিস্টরা নানাবিধ অপ্রতুলতার মাঝেও দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও সে হারে বাড়েনি প্যাথলজি শিক্ষকের পদ। বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদানের জন্যও নেই পর্যাপ্ত প্যাথলজিস্ট ও টেকনোলিজস্ট। বিভিন্ন রোগ নির্ণয়, বিশেষ করে ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ে সারা দেশে রয়েছে প্রযুক্তিগত অপ্রতুলতা। ফলে প্রান্তিক পর্যায় থেকে ঢাকা এবং বিদেশমুখী হচ্ছে ক্যান্সার রোগীরা। বাড়ছে চিকিৎসা খরচ ও বিড়ম্বনা। অনুষ্ঠানে একাডেমীর সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ শাহেদ আলী জিন্নাহ জানান বর্তমানে পাশের দেশের কর্পোরেট ল্যাবের এক ধরনের কালেকশন সেন্টার চালু হয়েছে বাংলাদেশে যার মাধ্যমে রোগীদের স্যাম্পল চোরাচালান করে পরীক্ষার জন্য ওই দেশে প্রেরন করা হচ্ছে। এসব সেন্টারে পরীক্ষার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে অবৈধভাবে। আবার প্রাপ্ত রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা ও দায়-দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে রোগী ভাগিয়ে নেয়ায় জড়িত একশ্রেনীর সেবাদানকারীরাও। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে আহবান জানান তিনি। দুই দিনের এই সম্মেলনের আমেরিকা, কানাডা, ভারত, সিঙ্গাপুর থেকে আগত প্যাথলজিস্ট সহ প্রায় সাড়ে তিনশ শত দেশী-বিদেশী প্যাথলজিস্টরা বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহন করে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় করেন এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনার আদান প্রদান করেন। উল্লেখ্য ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ একাডেমী অফ প্যাথলজী সারা দেশে প্যাথলজি শিক্ষা ও সেবার মানোন্নয়নে এবং প্যাথলজিস্টদের স্বার্থ রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।