দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ১৩ হাজার কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিককে ডিজিটাল সেতুবন্ধনে নিয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একইসঙ্গে, প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের কাছে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থসেবা কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পেশাদার প্রশিক্ষণ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রতিমন্ত্রী। আর যদি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিতে পুরোপুরি সক্ষম না হয় তবে এটুআই এর মুক্তপাঠের মাধ্যমে অনলাইনে এই সেবা চালুর পরমার্শ দিয়েছেন তিনি।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এটুআই এর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প থেকে সচেতনতা প্রচারের অংশ হিসেবে প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত অংশীজন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই পরামর্শ দেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ এই মন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে আমাদের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা; শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের যত্নের পাশাপাশি মনের যত্ন নেওয়াটাও আমাদের প্রয়োজন। আমাদের দেশের প্রায় ১৮ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক ও ১৩ শতাংশ শিশু যারা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা তারা জানেনা যে তাদের মানসিক সচেতনতা বা চিকিৎসা প্রয়োজন।
এখনো অনেকেই নিজেরে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটা নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষকদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ের একটি কোর্স অন্তর্ভুক্ত করে দিতে হবে; যাতে করে শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদেরকে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে পারেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে আমরা ডিজিটালি সংযুক্ত করতে পারি। এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে মাতৃত্বকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী নারী সহজেই নিয়মিত তাদের নিয়মিত চেকআপের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়েও পরামর্শ নিতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রয়োজনে আরও বেশি অবদান রাখার জন্য দেশের নাগরিকদের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা আমাদের সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশের ১৩ হাজার কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিককে ডিজিটালি কানেক্ট করতে পারি; যাতে যে কোন প্রয়োজনে বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ নিতে পারেন। এছাড়াও বাংলাদেশের নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ যেকোন ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ এর জন্য ‘মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ইতিবাচক পথ’ কোর্স এবং ক্যাম্পেইন চালু করা হয়েছে।
গোলটেবিলের শুরুতে ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ হেলাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশী প্রাপ্তবয়স্কদের ১৮% এরও বেশি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। তাদের মধ্যে, ৯০% এরও বেশি রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার অ্যাক্সেস নেই।