শাবল দিয়ে সিলেটের ওসমানী নগর থানা এলাকায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) এটিএম মেশিনের লক ভেঙে ২৪ লাখ টাকা ছিনতাই করেছিলো দুবৃত্তরা। আর এই দীক্ষা পেয়েছিলো ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি থেকে। নিয়মিত এই সিরিয়াল দেখেই রপ্ত করেছিলো এটিএম বুথের লক ভাঙ্গার কৌশল।
রাজধানী ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতারের পর বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতার হওয়া মো. শামীম আহাম্মেদ, নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মো. আব্দুল হালিমকে হাজির করা হয় গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে।
জনানো হয়, আটকের সময় তাদের কাছ থেকে লুট করা ২৪ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ ৮ হাজার টাকা, ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লাস ও মাথায় ব্যবহৃত তিনটি কাপড়ের টুকরা জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজার হাজী ইউনুস উল্ল্যাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নিচ তলায় এটিএম বুথের দায়িত্বরত গার্ডকে মারপিট করে হাত ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। এরপর কয়েকজন এটিএম বুথ মেশিনের লক ভেঙে নগদ ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ছায়া তদন্তের ধারাবাহিকতায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
লুটের বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এটিএম বুথের মেশিন ভেঙে টাকা লুটের মূল পরিকল্পনাকারী শামীম আহাম্মেদ নিয়মিত ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি দেখতেন। তিনি ওই সিরিয়াল দেখে এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভাঙার কৌশল রপ্ত করেন এবং টাকা লুটের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগী নূর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর তারা ঘটনার দিন মুখে মাস্ক, মাথায় গোলাপী রংয়ের কাপড় বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পরে এবং শাবল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেরপুর শাখার এটিএম বুথে প্রবেশ করেন। এটিএম বুথের সিসিটিভি ক্যামেরায় তাদের চেহারা যেন না দেখা যায়, সেজন্য কালো রঙের স্প্রে করে ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা করে দেন। এ সময় তারা এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করেন এবং হাত-মুখ স্কচটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলেন। পরে তারা শাবল দিয়ে এটিএমে বুথের লক ও বক্স ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।