গুগল, ইয়াহু, ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজনসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি, লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের লেনদেন থেকে উৎসে কর, শুল্কসহ রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালক। একইসঙ্গে এই রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে প্রতি ছয় মাস পর পর হলফনামা করে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তাদের বকেয়া শুল্ক আদায়ের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে করা রিট আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রোববার এ রায় দিয়েছেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে শুনানিতে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মো. মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক ও ব্যারিস্টার সাজ্জাদুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ, বিটিআরসি’র পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম আলমগীর পারভেজ। আর এনবিআরের পক্ষে ছিলেন সুজিৎ কুমার ভৌমিক।
শুনানি শেষে আদালত রায়ে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। এগুলো হলো—
এক. অনতিবিলম্বে সব ইন্টারনেট, যেমন—গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত (বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো) অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, সব প্রকার ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলোকে এ আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
দুই. ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিগত পাঁচ বছরে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আনুপাতিক হারে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে হবে।
তিন. উক্ত রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে।
চার. এই রায়টি একটি চলমান আদেশ বা কন্টিনিউয়াস ম্যানডামাস হিসেবে বলবৎ থাকবে; এবং
পাঁচ. এই রায় বাস্তবায়নে কোনও ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের যেকোনও নাগরিক যেকোনও সময় আদালতে আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইতে পারবেন।