মানসিক স্বাস্থ্য-মান বজায় রেখে মেটাভার্স প্রযুক্তির উপযোগী গেম তৈরীতে বাংলাদেশী যুবকদের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। বাজার গবেষণা, আর্থিক অনুদান আর দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সহজেই এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। ফ্রিল্যান্সিং করেও এই খাত থেকে মোটা আয় সম্ভব। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সম্ভব এই মাধ্যমে। ‘ফান থেকে গেম’ শুরু হলেও ‘গেম থেকে উইন’ এই জগতে রেনেসাঁ নিয়ে এসেছে মোবাইল গেম। এই খাতে ভবিষ্যতে রয়েছে মুনাফার অমিত সম্ভবানা। গেমিং কন্টেন্ট তৈরির পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় গেম স্ট্রিমিং করে আয় করছে নতুন প্রজন্ম। এই ইতিবাচক অবস্থানে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে ই-স্পোর্টস খাতের ‘সোশ্যাল ভ্যালু’ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে মেটাভার্স নিয়ে প্রথমবারের মত আয়োজিত ‘গেমিং ফর গুডস’ শীর্ষক সেমিনারে এমন কথা তুলে ধনে বক্তারা। এসময় ই-স্পোর্টসে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বাজার হিসেবে উল্লেখ করেন তারা।
ভার্চুয়াল এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটির সমন্বিত রূপ হলো মেটাভার্স যাকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির সংযোগ হিসেবে ধরা হচ্ছে। দেশে মেটাভার্স প্রযুক্তি নিয়ে প্রথমবারের মতো দারাজ বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এই আয়োজনের সাথে রয়েছে প্রেনিউর ল্যাব।
বাংলাদেশে তৃতীয় প্রজন্মের ইন্টারনেট এবং মেটাভার্স মাধ্যমে গেম উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে অধিবেশন পরিচালনা করেন প্রেনিউর ল্যাবের প্রধান নির্বাহী আরিফ নিজামী । দুবাই থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে আগামী দিনের প্রযুক্তি হিসেবে মেটাভার্সকে পরিচয় করিয়ে দেন রয়েক্স টেকনোলজিসের প্রধান নির্বাহী রাজীব রায়।
দিনব্যাপী আয়োজনে দুটি দলবদ্ধ আলোচনায় অংশ নেন বিশেষজ্ঞগন। বাংলাদেশের গেমিং শিল্প নিয়ে আলোচনা করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান আবদুল কাইউম, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল হাসান অপু, বেসিসের পরিচালক তানভীর হোসেন খান। অধিবেশনটি পরিচালনা করেন জাতিসংঘের জাতীয় পরামর্শক তানজিম ফেরদৌস।
বক্তারা বলেন, গ্লোবাল গেমিং ব্যবসায় দেশের তরুণদের স্টার্টআপ হিসেবে অংশ নেয়া দরকার । দেশের তরুণরা গেম খেলার সময় অবশ্যই মানসিক স্বাস্থ্য’র দিকে খেয়াল রাখতে ও অন্যান্য নেগেটিভ দিক গুলো পরিহার করতে হবে।
খেলোয়াড় এবং ডেভেলপাররা পৃথক আলোচনায় অনলাইন গেইমের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। আলোচনায় অংশ নেন প্রোগেইমার সাদমান সাকিব খান, মোহাম্মদ আলিউর রহমান সোহান, ফেইসবুকের স্পার্ক এর এআর ডেভেলপার ইশরাত উর্মি এবং আরআরডিএলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাহির ফায়সাল।
প্রেনিউর ল্যাবের প্রধান নির্বাহী আরিফ নিজামী বলেন,আগামীদিনের প্রযুক্তি হিসেবে সামনে আসছে মেটাভার্স যা দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে গেমিং সব ক্ষেত্রেই প্রভাব রাখবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দশ কোটির বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন যাদের বেশিরভাগই মোবাইল ফোনে সংযুক্ত। মেটাভার্সকে সামনে রেখে বৈশ্বিক অনলাইন গেমিং বাজারকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে তরুনদের প্রস্তুত করায় জোর দিচ্ছি আমরা। এই সেশনটির আগে অনলাইন গেমিং উইক এবং স্পার্ক এ আর কন্টেস্টে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর তরুন শিক্ষার্থীরা।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৩ গেমারকে অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়। বিজয়ীরা হলেন আশিকুর জামান রাকিব, রেদওয়ান আহমেদ ও আব্দুল্লাহিল কাফী।