কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তৃতীয় দফায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘ডিজিটাল পশু হাট’। তবে এবার হাট বসেছিলো সরকারি ডোমেইনে। এই হাটের কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে এটুআইর অনলাইন প্ল্যাটফর্ম একশপ। বাস্তবায়ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)।
করোনার লকডাউনে গত বছর (২০২১ সালে) ডিজিটাল কোরবানির হাটে বিক্রি হয়েছিলো ৩ লাখ ৮৭ হাজার গরু-ছাগল ও অন্যান্য পশু যার বাজারমূল্য ছিলো ২ হাজার ৭৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকা। এবার হাট শুরুর এক সপ্তাহে (৩-১০ জুলাই) বিক্রি হয়েছে ৭৬ হাজার ৯৮৩টি কোরবানির পশু। মোট বিক্রি হয়েছে ৭৩০ কোটি টাকার পশু।
এটুআই-এর কমিউকেশনস অ্যান্ড আউটরিচ কনসালট্যান্ট আদনান ফয়সাল জানিয়েছেন, গত ১০ জুলাই (ঈদের আগের দিন) পর্যন্ত এই প্লাটফর্মে আঞ্চলিক হাটের ৫৯ হাজার ৪৮১টি এবং খামারিদের ১৭ হাজার ৫০২টি পশু বিক্রি হয়। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ডিজিটাল হাটের ওয়েবসাইটে ২১ লাখ ৬ হাজার ৮৪২টি হিট পড়েছে। আঞ্চলিক হাটের ৫৮৭ কোটি ও খামারিদের ১৪৩ কোটি টাকার পশু বিক্রি হয়েছে। সবমিলে ডিজিটাল হাটে ৭৩০ কোটি টাকার পশু বিক্রি হয়েছে।
লকডাউন না থাকলেও ঘরে বসে নিজেদের পছন্দের কোরবানির পশু কেনার সুযোগ করে দিতে গত ৩ জুলাই আরও বড় পরিসরে digitalhaat.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ডিজিটাল হাটে গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, উট ও মহিষ ক্যাটাগরিতে দেশের ৯৫০টিরও অধিক হাটকে যুক্ত করা হয়। যুক্ত করা হয় বিভিন্ন এলাকার ৭০টি খামার।
এছাড়া দারাজ কয়েক বছর ধরে ‘গরুর হাট’ শিরোনামে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি করে আসছে। এবার তারা ফেসবুক লাইভে গরুর ওজন, রঙ, দাঁত দেখে কেনার এবং খামার ও গরুর ভিডিও দেখার সুযোগ করে দেয়।
একইভাবে ২০২০ সাল থেকে কোরবানির পশু বিক্রি করে আসছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ই-কমার্স কোম্পানি ‘অথবা ডটকম’। আরেক কোম্পানি বেঙ্গল মিট রাজধানীসহ সারাদেশেই অনলাইনে কোরবানির পশু সরবরাহ করে। পশুর হাটে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন নিশ্চিত করতে এবার ডিএনসিসি তাদের এলাকার মধ্যে ছয়টি পশুর হাটে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ বসায়। ‘স্মার্ট হাট’ নামে নামের এই প্রকল্প নিয়েছে ডিএনসিসি। একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় এই স্মার্ট হাট কার্যক্রম চালায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রসঙ্গত, জনসমাগম ও ভোগান্তি কমাতে ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো অনলাইনে প্ল্যাটফর্মে (ডিজিটাল পশুর হাট) কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হয়। এই হাটের মাধ্যমে ২০২০ সালে ২৭ হাজার কোরবানির পশু বিক্রি হয়।
এদিকে সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর ঈদুল আজহার দিন সারা দেশে কোরবানি হয়েছে ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি পশু, যা গতবারের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। গতবছর সারা দেশে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছিল ঈদে। এই হিসেবে এ বছর পশু কোরবানি বেড়েছে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫২১টি বা ৯ দশমিক ৪ শতাংশ।