সাইবার ওয়র্ল্ডে কেউ কারো নিরাপত্তা দিতে পারে না। আর বিটিআরসিও পাহাড়াদার নয়। তারপরও এসব বিষয়ে নজর রাখতে ইতোমধ্যেবিটিআরসি সার্ট ও সাইবার সিকিউরিটি সেল গঠন করা হয়েছে। তবে এগুলো এখনো কাজ শুরু করেনি। আর এগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। এমনটাই মনে করছেন বিটিআরসি প্রধান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
‘তাই কীভাবে বিটিআরসি’র অংশীজন বিশেষ করে টেলিকম খাতে সেবাদাতা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইবার আক্রমণ সনাক্তকরণ ও সেগুলোতে সাড়া দিয়া বিষয় থাকছে এই মনিটরিং প্রক্রিয়ায়’- বলেছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান। আহ্বান জানিয়েছেন, বিটিআরসি-কে প্রতিপক্ষের কাতারে না দাঁড় করিয়ে দোষিদের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের।
তিনি বলেন, নীতিগতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণে বিটিআরসি’র সামর্থ ও সুযোগ কোনোটাই নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলে সোশ্যাল মিডিয়ার সব দায় বিটিআরসি’র ওপর চাপানো বাস্তব সম্মত নয়।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান স্পষ্ট করে বলেছেন বিটিআরসি থেকে যারা লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করলেও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা বিটিআরসি’র কাজ নয়। একইভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব আপত্তিকর কনটেন্টদাতাদের নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ বিটিআরসি’র নেই। সে কারণে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে তারা এ ধরনের কাজের সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে যত ধরনের কন্টেন্ট দেখা যায় সেগুলোর যে প্লাটফর্ম আছে সেগুলোর মালিকরাও বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণে নেই। বাংলাদেশের ভিতরে বসে তারা এটা করছে না। বাইরে থেকে এটা করছে। যে কারণে বিটিআরসি তাদের নিয়ন্ত্রণও করতে পারে না। সে কারণে এখানে বিটিআরসি’র সীমবদ্ধতা রয়েছে।
আর একেক ব্যক্তিকে পাহারা দেয়াও সম্ভব নয় উল্লেখ করে শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেছেন, অনেকের মধ্যেই এমন কনসেপ্ট রয়েছে যেনো ব্যক্তিগতভাবে যেসব কনটেন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় যাচ্ছে, এগুলো পাহারা দেয়ার দায়িত্বটাই যেন বিটিআরসি’র। মূলত সাইবার ওয়ার্ল্ডে কেউ কারো নিরাপত্তা দিতে পারে না। এখানে প্রত্যেককে নিজ নিজ থেকে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হয়। আর যারা দুষ্ট তারা ফেক ছবি বা ভিডিও দিয়ে আপত্তিকর কনটেন্ট ছড়াতে পারে এই ক্ষেত্রে আমাদেরকে কেউ দিলে আমরা তাদেরকে সহায়তা করবো।
বিটিআরসি বিষয়ে আদলতে পর্যবেক্ষণ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি, আমাদের যারা আইনজীবি আছেন, তারাও কিন্তু আদালতে মামলা করতে গিয়ে সরাসরি বিটিআরসি-কে প্রতিপক্ষ করছেন। কিন্তু যারা বা যিনি অপরাধ কাণ্ড ঘটালেন তাদের কিন্তু আসামির কাতারে রাখা হচ্ছে না। এর ফলে ওই দুষ্ট চক্র আরো উৎসাহিত হচ্ছে। অথচ যিনি আপত্তিকর কনটেন্ট ছড়ান ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করে তাকে দিয়েই ভিডিও সরানো সহজ। তা না করে বিটিআরসি-কে নির্দেশ দিলে আমাদেরকে ফেসবুকের কাছেই যেতে হয়।
বিটিআরসি’র কাজ বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয়ভাবে আপলোড করা আপত্তিকর কনটেন্ট আমরা ডিওটি’র মাধ্যমে সিটিডিআর মুছে দিতে পারি। আমাদের এখানে যে গেটওয়েতে আমরা মনিটরিং করছি। এর বাইরে জনস্বার্থে বিটিআরসি স্ব-প্রণোদিত হয়ে কাজ করে। চেষ্টা করছে ফেসবুককে বাংলাদেশে অফিস স্থাপনে বাধ্য করতে, যেভাবে রাজস্ব বোর্ডের নিবন্ধন নিতে বাধ্য করা হয়েছে।