আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড সফটওয়্যার সিকিউরিটি কোম্পানি ওপেনরিফ্যাক্টরিতে বিনিয়োগ করেছে।
প্রি-সিরিজ এ রাউন্ডে ১ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য ঢাকায় প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের উপস্থিতিতে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। স্টার্টআপ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ, হেড অব পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট হাসান এ. আরিফ, ওপেনরিফ্যাক্টরির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুশফিক মনজুর এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ওপেনরিফ্যাক্টরি ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ইনোভেশান গ্রান্ট ২০২১ এর চ্যাম্পিয়ন স্টার্টআপ।
যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে সফটওয়্যারের ত্রুটি-সৃষ্ট ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে ওপেনরিফ্যাক্টরি। ওপেনরিফ্যাক্টরির ফ্লাগশিপ প্রোডাক্ট ইনটেলিজেন্ট কোড রিপেয়ার (আইসিআর) অন্য সফটওয়্যারের সিকিউরিটি ভালনারাবিলিটি এবং রিলায়াবিলিটি ও কমপ্লায়েন্স বাগ অত্যন্ত সুচারুভাবে খুঁজে বের করে এবং সেগুলো অটোমেটিক্যালি ফিক্স (fix) করে দেয়। এছাড়া ওপেনরিফ্যাক্টরি একই প্রযুক্তির সাহায্যে Managed Security Audit Service প্রদান করে থাকে। বাজারের অন্যান্য টুলের সাথে ইনটেলিজেন্ট কোড রিপেয়ার (আইসিআর) এর ৩ টি মুল পার্থক্য রয়েছে – (১) অন্যসব টুল যেসকল ক্রিটিকাল বাগ খুজেই পায় না আইসিআর সেগুলো খুজে পায়। (২) আইসিআর অত্যন্ত সুচারুভাবে (কখনো কখনো ৩০০ গুন বেশি সুচারুভাবে) বাগ খুঁজে বের (৩) আইসিআর অটোম্যাটিকালি সেই বাগ (bug) গুলোকে সফটওয়্যার কোড রান না করেই কোডের ভিতর ফিক্স (Fix) করে দেয়, যা বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র। এর ফলে ডেভেলপাররা সর্বচ্চ গুনগত মানের সফটওয়্যার দ্রুততার সাথে বাজারে রিলিজ করতে পারেন।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড হল আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি। ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দকৃত মূলধন নিয়ে ২০২০ সালের মার্চ মাসে যাত্রা শুরু করে।
অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, “বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবনের জন্য একটি উর্বর ভূমিতে পরিণত হয়েছে । সরকার উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে দৃঢ় বিশ্বাসী, এবং আমরা বিশ্বাস করি যে স্টার্টআপগুলো সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুতবপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে। এই উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোকে সমর্থন করার জন্য সরকার স্টার্টআপ বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রযুক্তি স্টার্টআপে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে স্টার্টআপ বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি এই বিনিয়োগের মাধ্যমে ওপেনরিফ্যাক্টরি এই ইন্ডাস্ট্রিতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
“সফটওয়্যার সিকিউরিটি ইন্ডাস্ট্রিতে ওপেনরিফ্যাক্টরি যে কাজ করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং ওপেনরিফ্যাক্টরিতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগ, এটিকে ইন্ডাস্ট্রিতে শীর্ষস্থানীয় হতে সাহায্য করবে। আমি আশা করি তারা স্টার্টআপ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। ” বলেন মো. শামসুল আরেফিন, সচিব, আইসিটি বিভাগ এবং চেয়ারম্যান স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড।
“আমাদের লক্ষ্য হল স্টার্টআপের সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশী স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে সমর্থন করা এবং একটি প্রাণবন্ত পরিবেশ তৈরি করা। ওপেনরিফ্যাক্টরি এর মত সম্ভাবনাময়ী ভেঞ্চারগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স খাতে বলিষ্ঠ প্রভাব রাখে। সঠিক পন্থা এবং দৃঢ় লক্ষ্য থাকলে ওপেনরিফ্যাক্টরি ইকোসিস্টেমে একটি কার্যকর এবং লাভজনক স্টার্টআপের এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ স্থাপন করতে সক্ষম হবে”- স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ বলেন।
“আজ পর্যন্ত Computer science এর সকল মৌলিক উদ্ভাবন এর ৯৫% এরও বেশি হয়েছে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে। এই প্রথম একটা কোম্পানি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং fundamental problem এর innovative solution নিয়ে আসছি সম্পূর্ণ আমাদের দেশীয় মেধা, প্রযুক্তি ও সামর্থ্যে। স্টার্টআপ বাংলাদেশকে আমাদের এই চলার পথে সহযাত্রী হিসেবে পেয়ে আমরা ভীষণ আনন্দিত।“ ওপেনরিফ্যাক্টরির ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা মুশফিক মনজুর বলেন।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সুত্র ধরে,স্টার্টআপ বাংলাদেশ বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ করছে এবং ওপেনরিফ্যাক্টরিতে বিনিয়োগ করে সেই ঐতিহ্যকে অব্যাহত রেখেছে।