ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিটে মুসলিম লেখায় সাম্প্রদায়িকতা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ডাক বিভাগ।ডাকটিকিটের ওপর লিখেছে ‘৪ জানুয়ারি ২০২১, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়েছেন অনেকে। এর জবাবেই এই মন্তব্য করেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডাকটিকিটে ইতিহাসের সত্যটা তুলে ধরা হয়। এতে কোনো পরিবর্তন করা যায় না। এ জন্য তিনি সমালোচনকারীদের সত্যকে মোকাবিলা করতে বলেছেন।
ছবিযুক্ত এই উদ্বোধনী খামের ছবি নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে পোস্ট করেন মোস্তাফা জব্বার।
প্রেস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ–এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, ছাত্রলীগ থেকে পূর্ব পাকিস্তান শব্দটি ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে ক্রমশ অপস্রিয়মাণ হয়ে আসে। একাত্তরে পুরোপুরি মুছে যায়। কিন্তু যেসব নেতাকর্মী পূর্ব পাকিস্তানকালের, তারা সেই ধারা বহন করতেই পারেন অন্তরঙ্গে। তার প্রতিফলন যে ঘটানো হবে ডাকটিকিটে, তা বিস্ময়কর বৈকি। ওই শব্দটি মুছে গেলে তাদের নামগন্ধ মুছে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায়ও হয়তো। তাহলে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ জুনে ৭২ বছর পালন করবে? তাহলে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পালনের কী হবে? গোলমাল লাগছে।
সেখানে জেসমিন ইসলাম মোহনা নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা এখন স্বাধীন বাংলাদেশ। মুসলিম শব্দটা বহু আগে ছাত্রলীগ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে এই শব্দ সংযোজনের কারণ কী? আমরা কি পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছি?’
এর জবাবে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন, ‘ডাকটিকিট ইতিহাসকে ধারণ করে। ভাবুন, যদি লিখি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন—তবে কতটা সত্য আপনার নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবেন? মুসলিম লেখায় সাম্প্রদায়িকতা নেই—তখনকার প্রয়োজন ছিল, এটা বঙ্গবন্ধু জানতেন। পরে তিনিই বাদ দেন। আমরা পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ করিনি? ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হীনম্মন্যতা ও অপরাধ। সত্য যা, তাকে মোকাবিলা করুন।’
একজনের মন্তব্যের জবাবে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন, ‘এটি ডাকটিকিট ইতিহাস বিকৃতি করার সুযোগ নেই—এটা মোটেই সাম্প্রদায়িকতা নয়। সাম্প্রদায়িকতা আপনার অন্তরে।’
মোস্তাফা জব্বার গণমাধ্যমকে বলেন, ডাকটিকিটে ইতিহাসের সত্যটা তুলে ধরা হয়। এতে কোনো পরিবর্তন করা যায় না। ইতিহাসে যেটুকু যে অবস্থায় আছে, সেটাই প্রকাশ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। এর বিকল্প কী আছে যে তা দিয়ে সত্য প্রকাশ করতে পারব? ইতিহাসের ধারাবাহিকতা থাকে। সেই ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ থেকে মুসলিম বাদ গেছে। তারপর পূর্ব পাকিস্তান ও মুসলিম দুটো শব্দ বাদ গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হয়েছে।’