দেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে অনলাইন কেনাকাটা। ফলশ্রুতিতে বিদায়ী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ই-কমার্স বাজার থেকে আয় হয়েছে এক হাজার ৬৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা। বছর শেষে এই অংক ১৫ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হারে আগামী ২০২৩ সালে এই আয় তিন হাজার ৯৭ মার্কিন ডলারে পৌঁছবে। বিদায়ী বছরে অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা ২২.৪ শতাংশ বাড়লেও ২০২৩ সাল নাগাদ এই প্রবৃদ্ধি ২৬.৮ শতাংশে উন্নীত হবে। গ্রহাক প্রতি গড় আয় বাড়বে ৪৫.১৬ মার্কিন ডলার।
মূলতঃ ফ্যাশন, ইলেকট্ররিক্স ও মিডিয়া, খেলনা, শখের সামগ্রী, আসবাব পত্র এবং খাবার ও ব্যক্তিগত ব্যবহার্য দ্রব্যের ই-বাজার ধারাবাহিক ভাবে বাড়বে। ২০২৩ সাল নাগাদ ফ্যাশন সামগ্রির ই-কমার্স বাজার হবে এক হাজার ২৪২ মিলিয়ন ডলারের। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মিডিয়া খাত থেকে আয় হবে ৭৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। খেলনা, শখের সরঞ্জামের ই-বাজারের আকার হবে ৪৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের। এছাড়াও ফার্নিচার ও অ্যাপ্লায়েন্সে ৩৫১ মার্কিন ডলার এবং ফুড ও পার্সোনাল কেয়ারেরর বাজার আকার হবে ২৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ধারাবাহিক গবেষণার মাধ্যমে এমন আগাম বার্তা দিয়েছে স্ট্যাটিসটা। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা অনুযায়ী, চলতি বছরে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের সিংহভাগ ছিলো ফ্যাশন সেক্টরের দখলে। এ বছর এই খাতের বাজার আকার ছিলো ৫৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গবেষণা সূচক অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে অনলাইন গ্রাহকের সংখ্যা ছিলো ৩০ দশমিক ৯১ মিলিয়ন। বাড়তে বড়তে চলবি বছরে এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৮ মিলিয়নে। ধারণা করা হচ্ছে ২০২৩ সাল নাগাদ এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫.৩ মিলিয়নে।
এদিকে বয়সের হিসেবে বাংলাদেশে অনলাইনে কেনাকাটায় সবেচেয়ে এগিয়ে আছেন ২৫-৩৪ বছরের ক্রেতার। মোট ক্রেতার ২৮ দশমিক ৬ শতাংশই এই বয়সের ক্রেতা। এ বছর ১৮-২৪ বছর বয়সী অনলাইন ক্রেতার হার ছিলো ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ। ৩৫-৪৪ বছর বয়সী ক্রেতার হার ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ, ৪৫-৫৪ বছর বয়সী ক্রেতার হার ১৮ দশমিক ১১ এবং ৫৫-৬৪ বছর বয়সী ক্রেতার হার ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর বিশ্বব্যাপী ই-কমার্স প্লাটফর্মে বেচাবিক্রি হয়েছে ৩ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য। ২০২৩ সালে ই-কমার্স সাইট থেকে খুচরা বিক্রির রাজস্ব ৬ দশমিক ৫৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে ২০১৭ সালে তিনটি শীর্ষ অনলাইন স্টোরের রাজস্ব ছিল সব মিলিয়ে মাত্র ১০০ বিলিয়ন ডলার।
গবেষণা বলছে, এখনো মানুষ অনলাইনে কোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ডেস্কটপ থেকে অর্ডার দেয়াই বেশি পছন্দ করে। কারণ ছবি, ভিডিও দেখে পণ্য পছন্দ করার জন্য ডেস্কটপের বড় স্ক্রিন বেশ সুবিধাজনক। তবে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট থেকে অর্ডার করার প্রবণতাও বাড়ছে।