যুক্তরাষ্ট্রে ইউটিউবের ভিউ বাড়াতে প্লেন দুর্ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে ট্রেভর জ্যাকব নামের এক পাইলটের বিরুদ্ধে। ইউটিউবার ওই পাইলটের বিরুদ্ধে মাঝ আকাশ থেকে ঝাঁপ দেওয়া এবং ইচ্ছাকৃতভাবে প্লেন বিধ্বস্ত করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় তার ২০ বছর সাজা হতে পারে।
শুক্রবার (১২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমি আমার প্লেন বিধ্বস্ত করেছি’ শিরোনামের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ২০২১ সালের নভেম্বরে ট্রেভর জ্যাকব দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার উপর দিয়ে প্লেন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি ইঞ্জিনের সমস্যায় পড়েন বলে ধারণা করা হয়।
প্রায় তিন লাখ মানুষ নাটকীয় ওই ভিডিও দেখেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ২৯ বছর বয়সী জ্যাকব একক ইঞ্জিনের ওই প্লেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য বের হচ্ছেন। আর সে সময় তার হাতে একটি সেলফি স্টিক ছিল।
ধীরে ধীরে তাকে লস প্যাড্রেস ন্যাশনাল ফরেস্টের ঘন গাছপালার মধ্যে প্যারাশুটে করে নেমে আসতে দেখা যায়। প্লেনটির প্রায় সবখানেই ক্যামেরা লাগানো ছিল । তাতে দেখা যায়, সেটি আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ন্যাশনাল ফরেস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এক পর্যায়ে তা বিধ্বস্ত হয়।
এই দুর্ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেফটি বোর্ড এবং ফেডারেল অ্যাভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) -এর তদন্তকারী দল এই প্লেন বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তখন তারা জ্যাকবকে ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণের নির্দেশও দেন।
পরে লস অ্যাঞ্জেলস আদালতে জ্যাকব একটি আবেদন চুক্তি করেন। চুক্তি অনুসারে, নাটকীয় ওই দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ পর তিনি ও তার এক বন্ধু মিলে একটি হেলিকপ্টার দিয়ে বনের মধ্য থেকে ধ্বংসাবশেষটি উদ্ধার করেন। এর আগে অনবোর্ড ক্যামেরা থেকে ডেটা উদ্ধার করেন। পরের কয়েক দিনে প্লেনটিকে তিনি ছোট ছোট ছোট টুকরা করে কেটে ফেলেন এবং স্থানীয় লোমপক সিটি বিমানবন্দর এলাকার একটি ডাস্টবিনে ধ্বংসাবশেষ ফেলে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ উড্ডয়ন নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা এফএএ ২০২২ সালের এপ্রিলে জ্যাকবের পাইলটের লাইসেন্স কেড়ে নেয়। জ্যাকব স্বীকার করেন যে, তিনি ধ্বংসাবশেষের আলামত নষ্ট করার মাধ্যমে ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে বাধা দিতে চেয়েছিলেন এবং একটি ওয়ালেট কোম্পানির সঙ্গে স্পনসরশিপের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য ভিডিওটি তৈরি করেন।
ফেডারেল তদন্তে ব্যাঘাত ঘটানো এবং আলামত ধ্বংস করার জন্য জ্যাকব নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করতে সম্মত হয়েছেন। এমন অপরাধে তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।