ফোরজির সর্বনিম্ন গতিসীমা ২০ এমবিপিএসের বাধ্যবাধকতা নীতিমালা হতে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।প্রথমে ১ জিবিপিএস তারপর ১০০ এমবিপিএস শেষে ২০ এমবিপিএসের পর এখন গতিসীমার উল্লেখই তুলে দেয়া হয়েছে।নীতিমালায় সর্বনিন্ম গতির সুস্পষ্ট উল্লেখের বদলে এখন এ সংশ্লিষ্ট একটি ব্যাখ্যা যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ফোরজির সর্বনিন্ম গতি বা সংজ্ঞা হবে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন বা আইটিইউটর সংজ্ঞায়। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, কাগজপত্রে এই পরিবর্তনের তারিখ দেখানো হচ্ছে ১০ জানুয়ারি। কিন্তু গত সপ্তাহে ফোরজির লাইসেন্স এবং স্পেকট্রামের নিলামে অংশ নেওয়ার আবেদন জমা দেওয়ার পর অপারেটরগুলো বিটিআরসির কাছ হতে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছেন। ফোরজি নিয়ে আইটিইউ’র সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এলটিই, ওয়াইম্যাক্স, এইএসপিএ প্লাসে সেকেন্ডে কয়েক মেগাবাইট গতি দিতে পারে, যা থ্রিজি হতে বেশি হয়-তাই ফোরজি।
প্রথমে ফোরজির খসড়া নীতিমালায় ফোরজির সর্বনিন্ম গতি এক জিপিবিএস বলা হয়েছিল। পরে তা কমিয়ে ১০০ এমবিপিএস করা হয়। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া নীতিমালায় এই গতির কাথা বলা আছে। পরে সেটি পরিবর্তন করে ২০ এমবিপিএস করা হয় যা প্রধানমন্ত্রী আবার অনুমোদন দেন। এখন সেই সীমাই তুলেই দেওয়া হল।মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর দফায় দফায় আপত্তির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন সম্প্রতি এই পরিবর্তন করল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।এই পরিবর্তনে অপারেটরগুলো খুশি। তারা বলছেন, ২০ এমবিপিএস একটি অবাস্তব গতি। বাংলাদেশে এখন যত স্পেকট্রাম আছে তার সবও যদি এক অপারেটর নিয়ে নেয় তাহলেও তারা এই গতির নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। তবে ফোরজির গতি থ্রিজির চেয়ে অনেক বেশী হবে-এই নিশ্চয়তা দেন তারা।মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব ও প্রধান নির্বাহী টিআইএম নূরুল কবীর টেকশহরডটকমকে বলেন, এই পরিবর্তনকে আমরা স্বাগত জানাই। এখানে একটি বড় ধরনের বিনিয়োগের বিষয় রয়েছে, তাই বিষয়গুলো সব পক্ষের জন্য উইন-উইন হতে হবে।গ্রাহকদের মানসম্মত ফোরজি সেবা দেয়া ও খাতটির টেকসই ইকোসিস্টেম উন্নয়নে সবাই মিলে কাজ করার প্রত্যয় জানান অ্যামটব মহাসচিব।২০১৩ সালে শুরুর সময় থ্রিজির জন্যে ৫১২ কেবিপিএস গতি বলা হলেও পরে অনেক ক্ষেতেই সেটা বেড়েছে। তবে সারা পৃথিবীতে থ্রিজির গড় গতি ৪ দশমিক ৪ এমবিপিএস হলেও বাংলাদেশে তার ধারে কাছেও নেই।
তবে অপারেটররা আবার বলছেন, কোথাও কোথাও হয়তো তাদের এই গতি নেই। কিন্তু অনেক জায়গাতেই তারা এই গতি নিশ্চিত করতে পেরেছেন।
তাছাড়া মোবাইল ইন্টারনেরেটর গতি ঠিক রাখার জন্যে যেসব উপাদন অপারেটরদের হাতে থাকতে হয় তার অনেক কিছুই তাদের হাতে নেই। তাই অনেক সময় ঠিকঠাক সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না বলে জানান একটি অপারেটরের এক বড় কর্মকর্তা।
এদিকে বিটিআরসি বলছে, নীতিমালায় গতির বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও সামনে কোয়ালিটি অব সার্ভিসের যে নির্দেশনা তৈরির কাজ তারা করছেন সেখানে ফোরজির গতির বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। ফলে ওই নির্দেশনার মাধ্যমেও গ্রাহকের গুণগত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
আল-আমীন দেওয়ান