ব্রডব্যান্ডের মতোই গতির ভিত্তিতে মোবাইল ইন্টারনেটেও মূল্য বেধে না দেয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আর ই-ভ্যালি’র মতো ই-কমার্স খাতে নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে এই খাতে আয়কর আরোপের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের চেয়ারপারসন হাসানুল হক ইনু।
১৭তম বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের উদ্বোধনী দিনে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত টেকসই উন্নয়নের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ও স্মার্ট বাংলাদেশ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্বে যেতে তরুণদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিআজিএফ যতটা কার্যকর হবে; পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের পথ ততটাই মসৃণ হবে।
তিনি আরো বলেন, ৪৭টি বৈঠক করে আমরা এক দেশ এক রেট বাস্তবায়ন করেছি। এজন্য আমি আইএসপিএবি’র কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দেশে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর দেড় কোটি মানুষ ব্যবহার করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটে সংযুক্তরা সমস্যায় পড়ছেন। অবকাঠামো ঠিক ভাবে না করায় এমনটা হচ্ছে। এজন্য আমরা কঠোর হয়েছি। কিছু অপারেটরের সিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। গ্রাহক বাড়ালে গ্রাহকের সেবাও বাড়াতে হবে। এই কারণে আমরা বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের মতো মোবাইল ইন্টারনেটেও রেট কেন বেধে দিতে পারবো না সে বিষয়ে অনুরোধ করেছি। আমি জানি এ জন্য সিরিয়াসলি কাজ চলছে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান মহদয় অচিরেই আমার সুখবর দেবেন। আমি আশা করবো বেধে দেয়া দামে যেনো সাধারণ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।
এছাড়াও ইন্টারনেট ও ই-কমার্স ব্যবসাকে করমুক্ত রাখলে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল লেনদেনে আরো উৎসাহিত হবেন বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রী আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার ১২১৬টি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছে। ডটবাংলা বাস্তবায়নের ফলে এখন ডিজিটাল দুনিয়ায় খুলে গেছে বাংলা ভাষার অপার সম্ভাবনার দূয়ার।
অপরদিকে সভাপতির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, লিঙ্গ ও ধনী গরিবের বৈষম্য দূর করতে আমাদের সামনে ৩টি বাধা রয়েছে। এগুলো হলো- ভাষা, প্রযুক্তি ও তথ্য। এই বাধা দূর করতে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি নিরাপদ ইন্টারনেটের জন্য জাতিসংঘকে ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন- বিএনএনআরসি সিইও এএইচএম বজলুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইজিএফ মহাসচিব মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু।
অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে এটুআই পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী, আইএসপিএবি সভাপতি মো: ইমদাদুল হক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টি’র সভাপতি রিজওয়ান রহমান, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রোজিনা নাসরিন, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বক্তব্য রাখেন।
এর আগে স্মার্ট বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে যুব ও যুব মহিলাদের ক্ষমাতায়ন বিষয়ক অধিবেশন দিয়ে শুরু হয় তিন দিনের বিআইজিএফ সম্মেলন। বিআইজিএফ সদস্য সচিব ফয়সাল আহমেদ ভূবনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইয়্যুথ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের চেয়ারপারস সৈয়দা কামরুন জাহান রিপা।
আলোচক হিসিবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, এটুআই প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবির, এটুআই হেড অব কমিউনিকেশন মানিক মাহমুদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য নেহরিন মোস্তাফা, ই-কুরিয়ার সিইও বিপ্লব জি রাহুল, ই-ক্যাব পরিচালক ও সেবা এক্সওয়াইজেড সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইলমুল হক সজীব এবং ডট এশিয়া হংকং এর ডিজিটাল পলিসি এবং কমিউনিটি রিলেশন ম্যানেজার জেনা ফাং, এপিনিক অস্ট্রেলিয়ার পলিসি ও কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র অ্যাডভাইজার শ্রী নিবাস গৌর চেন্ডি।