চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে এগিয়ে থাকতে পুরো দেশকেই সংযুক্ত করা হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগে। আর দুর্গম বিবেচনায় ১৬০টি ইউনিয়নে এই সংযোগ দেয়া হবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট নির্মাণের কাজ। সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। চুক্তি হবে যেকোনো সময়।
‘মুজিব বর্ষ’ ও ‘স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী’ উপলক্ষে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) আয়োজিত ‘নক্ষত্রের দেশে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে দেশের ১৬০টি দূর্গম ইউনিয়ন ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইভারের উচ্চগতির সংযোগ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের এমন কোন অঞ্চল থাকবে না যেখানে উচ্চগতির সংযোগ থাকবে না।
গাজীপুরে সজীব ওয়াজেদ উপগ্রহ ভূ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ খলিলুর রহমান ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরো জানান, ১৯৯৭ সালেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে আমাদের পিছিয়ে পড়তে হয়েছে।
বক্তব্যে দেশের প্রকৌশলীদের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু -১ স্যাটেলাইট পরিচালনায় তাদের দক্ষতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
বিএসসিএল-চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ কামরুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডঃ সাজ্জাদ হোসেন, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সিরাজ উদ্দিন ও বিটিআরসি’র কমিশনার এবং মহাপরিচলকেরা।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বলেন, বাংলাদেশের টেলিকম বিপ্লবে বঙ্গবন্ধুর অবদান চির অম্লান হয়ে থাকবে। তিনি ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রসারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সফলতা তুলে ধরেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগামী ১২ ডিসেম্বর আমরা ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। পৃথিবীর যে ৬/৭টি দেশ ফাইভ-জি প্রযুক্তি যুগে পা দিয়েছে বাংলাদেশ তাদের মধ্যে একটি বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ফাইভ-জি প্রযুক্তি হবে একটি ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি টু-জি, থ্রি-জি কিংবা ৪জি প্রযুক্তির মতো নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ফাইভ-জি প্রযুক্তি হবে পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার প্রযুক্তি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ড. শাহজাহান মাহমুদ স্যাটেলাইট যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ একটি দেশের তথ্য প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু ও স্যাটেলাইটসহ ৪টি বিষয়ে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ১২ বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। একইসঙ্গে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের বার্ষিকী সাধারণ সভা ও বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি।