বর্তমানে বিটিআরসি’র অনুমোদিত টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২ টি। গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সেবা চালু করে টাকা কেটে নেওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় সেবা চালু করে দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইতোমধ্যেই ১১টি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে বিটিআরসি। অভিযোগ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি বিটিআরসি’র প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করারও প্রমাণ পেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একইসঙ্গে পরিদর্শনে এদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিলেছে অভিযোগের প্রমাণ। সব মিলিয়ে ৯ ধরনের অনিয়ম পেয়েছে বিটিআরসি।
এরমধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধিত ঠিকানায় গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারও আবার নিজস্ব Monitoring Terminal/Online Monitoring ব্যবস্থা নেই। গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া, ওটিপি চালু না করা এবং তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে অবকাঠামো ভাগাভাগি চুক্তি ছাড়াই সার্ভার স্থাপন করার মতো অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।
বিটিআরসি বলছে, শিগগিরি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কমিশন হতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে এবং এরূপ পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান থাকবে। ইতোমধ্যে উইন মিয়াকি লিঃ, মিয়াকি মিডিয়া লিঃ ও বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লিঃ নামক তিনটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। বাকী প্রতিষ্ঠান সমূহের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তবে এখনো সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সূত্রমতে, অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে এসএসডি টেক, পার্পল ডিজিট কমিউনিকেশন লিমিটেড, দ্য অভি কথাচিত্র লিমিটেড, জয়কলস বাংলাদেশ লিমিটেড, ফোর ডিএল বাংলাদেশ লিমিটেড, গ্যাক মিডিয়া লিমিটেড, আজরা টেকনোলজিস লিমিটেড এবং বিটুএম টেকনলোজিস লিমিটেড।
টিভ্যাস (TVAS) এর পূর্ণরূপ হলো টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। মুঠোফোন অপারেটরের গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়ালপেপার, ভিডিও, বিভিন্ন তথ্য (কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ক), লাইফস্টাইল, মুঠোফোনের গেম, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা টিভ্যাস হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয় এবং সে সময় হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়।
টিভ্যাস প্রোভাইডারগণ চারটি মুঠোফোন অপারেটরের সাথে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে মুঠোফোন গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ,মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে। সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে প্রাপ্য অর্থের একটা অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মুঠোফোন অপারেটরগণ পেয়ে থাকে। এছাড়াও টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬.৫% বিটিআরসি/সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।