সিলট মহানগরীতে মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণ মাত্রা ক্ষতিকর পর্যায়ে নেই। মহানগরীর ৬টি পয়েন্টে স্থাপিত টাওয়ার অঞ্চলে ইএমএফ (ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড) রেডিয়েশন পরিবীক্ষণের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
ফলাফলে দেখা গেছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল উপশহর, আম্বরখানা, টোকের বাজার, আখালিয়া সুরমা গেট এবং দরগা গেট এলাকায় ইএমএফ নিঃসরণের মাত্রা জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক নয়।
বিটিআরসি জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আয়নজিং রিডিয়েশন প্রটেকশন (আইসিএনআইআরপি), ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে আইএমএফের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, সিলেট মহানগরীর আম্বরখানায় টাওয়ারের তেজস্ক্রীয় বিকিরণ মাত্রা সবচেয়ে ভালো পর্যায়ে রয়েছে। সেখানে ইএমএফ নিঃসরণের মাত্রা প্রতি বর্গমিটারে ০.০৪৫৩৫ ওয়াট।
আইসিএনআইআরপি-এর মানদণ্ড অনুযায়ী ইএমএফ নিঃসরণের গ্রহণযোগ্য মাত্রা প্রতি বর্গমিটারে ২.৮৭১ ওয়াট।
একইভাবে শাহজালাল উপ-শহরে ইএমএফ নিঃসরণের মাত্রা প্রতি বর্গমিটারে ০.০৫৭৮৪ ওয়াট এবং আখালিয়া সুরমা গেট এলাকায় ইএমএফ নিঃসরণের মাত্রা পাওয়া গেছে প্রতি বর্গমিটারে ০.০৮৩৪৩৮ ওয়াট।
এছাড়াও টোকের বাজারে ইএমএফ নিঃসরণের গড় মাত্রা ছিলো ০.২৭০৭ ওয়াট। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ইএমএফ নিঃসরণের মাত্রা গড়ে ০.৩০৮ ওয়াট এবং দরগাগেট এলাকায় সর্বোচ্চ ইএমএফ নিঃসরণের গড় মাত্রা ০.৫৯৩ ওয়াট।
বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান জানিয়েছেন, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও জামালপুরের পর ধারাবাহিক ভাবে দেশজুড়ে মোবাইল টাওয়ারের তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ মাত্রা পরীক্ষা করছে বিটিআরসি। সর্বশেষ সিলেটে টাওয়ারের পাঁচ মিটারের মধ্যে ইএমএফ নিঃসরণের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মানের চেয়ে অনেক কম রয়েছে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়।
তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিয়েশনের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মানেরও নিচে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। এমনকি স্বাস্থ্যহানির কোনও আশঙ্কা নেই।
প্রসঙ্গত, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাসহ সব স্পর্শকাতর জায়গা থেকে মোবাইল টাওয়ার দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর আগে মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর বিকিরণের (রেডিয়েশন) বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।