বিশ্বের ১৬০টি দেশের ৩১ হাজার প্রতিযোগীকে টপকে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এর ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের “টিম ডায়মন্ড” । দলটি এবারের নাসা স্পেস অ্যাপস বাংলাদেশ পর্বে কুমিল্লা থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। বাংলাদেশের আরও দু’টি দল- ঢাকা বিভাগের রানার্স আপ টিম যান্ত্রিক এবং বরিশালেরর চ্যাম্পিয়ন: প্রিহিম প্রো। জিতেছে প্রতিযোগিতার অনারেবল ম্যানশনস পুরস্কার।
চ্যাম্পিয়ন দলের দলনেতা ড্যাফোডিল ইন্টরন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তিষা খন্দকার। পাঁচ সদস্যের এই দলের বাকি সদস্যরা হলেন- একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুনিম আহমেদ (ইউএক্স নকশাকার), ইনজামামুল হক সনেট (সিস্টেম আর্কিটেক্ট), আবু নিয়াজ (ডেভেলপার) এবং গবেষক হিসেবে দায়িত্বপালনকারী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জারিন চৌধুরী। মেন্টর হিসেবে ছিলেন ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খালেদ সোহেল।
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল পাঠ চুকানোর আগেই বাচ্চারা যেন সহজেই তারাদের চিনতে পারে এজন্য নক্ষত্র ম্যাপিং নিয়ে ভিডিও গেম তৈরি করে এই গৌরব বয়ে আনে দলটি। টুইংকেল -টুইংকেল লিটিল স্টার কবিতার ছন্দের আবেশকে শিশু মনে জ্যোর্তিবিজ্ঞানী হওয়ার পথে ধাবিত করার এই আয়োজনে সফলতা পেলো এই পাঁচ তরুণ।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাতে সোয়া ১২টায় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের ওয়েব সাইটে এই ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, বিশ্বের চারটি মহাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১০টি বিভাগের চ্যাম্পিয়নদের এই তালিকায় বেস্ট ইউজ অব সায়েন্স ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে ন্যাশনাল তাইওয়ান ইউনিভার্সিটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
এছাড়াও ডাটা ব্যবহারের মুন্সিয়ানায় সেরার মুকট পেয়েছে স্টারফ্লক, আর্ট অ্যান্ড টেকনলোজিতে আর্থ, উইন্ড অ্যান্ড ফ্লেয়ার দল, বেস্ট ইউজ অব টেকনলোজিতে ট্যামিং পার্টিক্যাল, গ্যালাক্টিক ইমপ্যাক্টে সেলেন, বেস্ট মিশন কনসেপ্টে মার্স থ্রিডি হোম, বেস্ট স্টোরি টেলিং এ এমআইএমবিআই, গ্লোবাল কানেকশানে স্ট্যান্ডার্ড এনসিটিইউ সিএস স্ট্যুডেন্ট এবং লোকাল ইমপ্যাক্টে ব্রুট ফোর্স।
এ প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৬২টি দেশ থেকে দুই হাজার ৮১৪টি দল অংশগ্রহণ করেছিল। সব যাচাই-বাচাই প্রক্রিয়া শেষে আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার জন্যে এ বছর গ্লোবাল নমিনেশন পেয়েছিল বিশ্বের ৪২০টি দল। আন্তর্জাতিকভাবে সব বিচার প্রক্রিয়া শেষে মাত্র ৩৫টি দল ‘গ্লোবাল ফাইনালিস্ট’ তালিকায় জায়গা করে নেয়। ৩৫টি দলের এ তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশী দল হিসেবে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২২-এর গ্লোবাল ফাইনালিস্টে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশের ‘টিম ডায়মন্ডস’। সবাইকে হারিয়ে বাংলাদেশের ‘টিম ডায়মন্ডস’ নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২২ এর ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন।
গত বছর খুলনা থেকে মনোনীত দল ‘টিম মহাকাশ’ বিশ্বের ১৬২টি দেশের ৪৫৩৪টি দলকে হারিয়ে ‘নাসা বেস্ট মিশন কনসেপ্ট’ শ্রেণিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ভিনগ্রহে অভিযানের সময় মুক্তভাবে উড়তে থাকা ধুলিকণা নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে সক্ষম ‘এআরএসএস-অ্যাডভান্সড রিগোলিথ স্যাম্পলার সিস্টেম’ উদ্ভাবন করে এই পুরস্কার জিতেছিলো তারা।
শিগগিরই এই বিজয়ী দলকে সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে ডিজিবাংলা-কে জানিয়েছেন নাসা স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জের বাংলাদেশ অংশের আয়োজনের আহ্বায়ক ও বেসিসের পরিচালক তানভীর হোসেন খান। তিনি জানান, ‘গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন’ হওয়া দলগুলো যুক্তরাষ্ট্রে নাসার প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সুযোগ পায়। ওই সময় তারা নাসার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পাশাপাশি নাসার একটি রকেট উৎক্ষেপণ সরাসরি দেখার সুযোগ পান।