সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রাজধানীর সিআইডি সদর দফতরে বিশেষ সেমিনার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেমিনারে জানানো হয়, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের ফলে মানুষ প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। মানুষ খুব সহজে সেকেন্ডের মধ্যে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারছে। এতে করে মানুষ যেমন সুবিধা ভোগ করছে তেমন কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা অনলাইনে সাইবার প্রতারণা, অর্থ লোপাট, সাইবার অ্যাটাক, মাদক ও মানবপাচার, পর্নোগ্রাফি, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার, র্যানসমওয়্যার, ডেটা ব্রিচ, সাইবার বুলিংসহ বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ করছে। তবে এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বাংলাদেশে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে সেমিনার শেষে সাইবার নিরাপত্তায় করণীয় সম্পর্কে গুরুত্বপুর্ণ পরামর্শ প্রদান করা হয়।
স্টুডেন্ট এনগেজমেন্ট টু কমব্যাট সাইবার ক্রাইম শীর্ষক এই সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এবং গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে মোট ২৫৪ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব পরিদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়।
সেমিনারে সাইবার পুলিশ সেন্টারের কার্যক্রম নিয়ে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশনস অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সাইবার অপরাধের ধরন, করণীয়, প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা করেন।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক বিভাগের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সামছুল হক ডিজিটাল ফরেনসিক এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সেমিনারে মডারেটর হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. খান সরফরাজ আলী।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা সাইবার অপরাধ সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন। সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন সিআইডি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীরা এই প্রশিক্ষণের পর থেকে সিআইডির অ্যাম্বাসেডর হিসেবে সাইবার অপরাধ নিবারণ এবং সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য সিআইডিকে অবহিত করবে বলে জানান তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিআইডি প্রধান বলেন, “তরুণ প্রজন্ম তথা শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল অ্যাওয়ারনেস বিল্ডআপের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ নিবারণে সক্রিয় হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিআইডির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।”
তিনি আরো বলেন, “আজকের ছাত্রছাত্রীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, তারাই হবে জাতির কর্ণধার ও দেশ গড়ার কারিগর। সাইবার বুলিং, সাইবার হ্যারেজমেন্ট, আনইথিক্যাল কন্টেন্ট, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার, র্যানসমওয়্যার ইত্যাদি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামীতে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে কাজ করবে।”