তারহীন বিদ্যুত, ইন্টারনেট সহ নানা উদ্ভাবন নিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণে শেষ হলো তিন দিনের ডিআরএমসি টেক কার্নিভাল। উদ্ভাবন, প্রোগ্রামিং, গেমিং ও রোবটসহ নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রোজেক্ট ডিসপ্লেতে জুনিয়র গ্রুপে ডিআরএমসি শিক্ষার্থী তালহা ইবনে জুবায়ের, ইউশা ইসনাত ও শেখ তুহিনের দল এবং সিনিয়র গ্রুপে বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ ইয়াসিন আরাফাত, ফুয়াদ ও আদিয়ানের দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির মোঃ সবুজ আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঈদ হাসান এবং ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটির সৈয়দ মাহির।
শনিবার বিকেলে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলেজের ক্লাব সমূহের প্রধান সমন্বয়ক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নূরুন্নবী, কার্নিভালের আহ্বায়ক রাসেল আহমেদ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উত্তর প্রজন্মকে আগামীর প্রযুক্তি সম্পর্কে দক্ষ করে গড়ে তুলতে দেশের ৫৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টার (আরআসি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। এর মধ্যে স্মার্ট কলেজ হিসেবে সবার আগে এই সেন্টারটি ডিআরএমসি-তে করা হবে বলে জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই এই কলেজে তিনটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছি। আরেকটি স্কুল অব ফিউচার প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। এবার চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি বিষয়ে হাতে-কলমে শেখাতে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের সঙ্গে চুক্তি করে এশিয়ায় জাপান ও ভারতের পর বাংলাদেশে একটি সেন্টার ফর ফোর আইআর স্থাপন করতে যাচ্ছি। সেই ছাতার নিচে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৭টি আরআইসি স্থাপন করবো। প্রথম করবো কলেজ পর্যায়ে। সেটি হবে রেসিডেন্সিয়াল কলেজে।
টেক কার্নিভালে উপস্থাপতি প্রকল্পগুলো নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে পলক বলেন, ওয়ারলেস ইলেকট্রিসিটি প্রকল্পে এই তরুণ উদ্ভাবকেরা আজ আমার সামনে ২২০ ভোল্টেজের দুটি লাইট জ্বালিয়ে দেখালো। হয়তো এমন অসংখ্য উদ্ভাবন বাংলাদেশ থেকে আসবে। গুগল, ফেসবুক, চ্যাটজিপিটি শুধুমাত্র সিলিকনভ্যালি থেকে নয়, ২০৪১ সাল নাগাদ এই ইন্টারন্যাশনাল টেক কার্নিভালের উদ্ভাবকরা প্রযুক্তি বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে।
চ্যাটজিপিটি-কে দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে কবিতা লাখানোর মিশ্র অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী। একইসঙ্গে বাংলাদেশে তৈরী ইলেকট্রিক গাড়ি ‘পালকী’-তে চড়ে বিয়ের ২৫ বছর উদযাপনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
এর আগে সমাপনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে নির্মিত থ্রিলার মুভি ‘আন্তর্জাল’ নির্মাতা পরিবার।
আইসিটি বিভাগের আয়োজনে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত এই টেক কার্নিভালের সহযোগী ছিলো পেট্রোমেক্স রিফাইনারী লিমিটেড ইন্টারন্যাশনাল। আয়োজনে বাংলাদেশের প্রথম ইলেকট্রিক ফোর হুইলার গাড়ি পালকিসহ আইসিটি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্পের পোর্টফোলিও ১০টি স্টার্টআপ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের শতাধিক উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন করে।
আগামী বছর থেকে প্রতি বছর নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে এই টেক কার্নিভাল। ঢাকার বাইরেও বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়েও এই ধরণের টেক কার্নিভাল করবে আইসিটি বিভাগ।